হাসিনা আকতার নিগার:
বাংলাদেশে চেক সংক্রান্ত আইনে সংশোধন আসছে। কঠোর হচ্ছে এর বিধি বিধান। কিন্তু দুঃখজনক হলো, শত শত কোটি টাকা লুটপাট যারা করে তাদের কিছুই করতে পারছে না আইন। বরং এ আইনের অপব্যবহারের ফলে মিথ্যা মামলার স্বীকার হচ্ছে অনেক অসহায় মানুষ। ব্যক্তিগত আক্রোশ বা অসাধু ব্যক্তি চেকের মামলা দিয়ে হয়রানি করছে অনেক অসহায় ব্যক্তিকে। কারণ চেকের মামলায় নিম্ন আদালতে রায় বাদীর পক্ষেই যায়। উচ্চ আদালতে সবার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় না। আবার বলা হয় নিম্ন আদালতে বিবাদী পক্ষের কোন যুক্তি প্রমাণ কাজে দেয় না। তা দেখে উচ্চ আদালত। কতটা অসহায় পরিবেশ তা মানবিক দৃষ্টি দিয়ে চিন্তা করলে বুঝা যায়।
ব্যাংকের লেনদেন ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক বিষয়ে মানুষের লেনদেন হয়। আর এ লেনদেন করে নিজেদের বিশ্বাসের উপর। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এ বিশ্বাসের কারনে সাদা চেকে সাইন দিয়ে হস্তান্তর করে। অন্যদিকে জোরপূর্বক, ছলচাতুরীর মাধ্যমেও চেক হাসিল করে। যা পরবর্তীতে অপব্যবহার করে মিথ্যা মামলা সাজায়। সাইন করা চেকে মনের মত অংক বসিয়ে দিয়ে বিপদগ্রস্ত করে মানুষকে।
এসব ক্ষেত্রে আদালত সাক্ষী সাবুদ শুধুমাত্র আইনের ধারাবাহিকতায় পরিচালনা করে। দিনান্তে সাজাই জুটে বিবাদীর কপালে। প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশের মানুষ চেক যে একটা আইনগত দলিল তা বুঝতে অক্ষম এখন অবধি। যার ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছে। চেকের মামলায় বাদী ভুক্তভোগী এমনটা ধারণা পোষন করা পরিস্থিতি এখন আর নাই। বিবাদীকে হয়রানি করতে বাদী ভনিতা করছে তা বিবেচ্য করে আইন করা প্রয়োজন। তা না হলে চেকের মিথ্যা মামলা আদালতে বাড়বে।
এমনও দেখা যায় কেউ কারো কাছে থেকে অল্প টাকায় পায়। কিন্তু তার কাছে চেক আছে। সে চেকে ৫০ লক্ষ টাকা লিখে মামলা করে দিয়ে নিশ্চিত মনে বসে আছে। কারণ সে জানে বিবাদী জেলে যাবে। আর এত টাকা দেবার সার্মথ্য তার নাই যে উচ্চ আদালতে গিয়ে আপীল করবে। গণমাধ্যমে বারবার উঠে এসেছে আদালতে কিছু চক্র মিথ্যা চেকের মামলার কারসাজি করে। সুতরাং চেকের মিথ্যা মামলার হয়রানি কমাতে মহামান্য আদালতকে বিকল্প চিন্তা করতে হবে। চেক মানে সাজা এ আইনের অপব্যবহার রোধ করা প্রয়োজন।
লেখক: কলামিস্ট