আসন্ন সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২০-২১ বর্ষের নির্বাচন জমে উঠেছে। শেষ মুহূর্তে এসে প্রচারে ব্যস্ত প্রার্থীগণ। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভোটের জন্য। নির্বাচনে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪টি পদে মোট ৩১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কাল বাদে পরশু সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির এই নির্বাচন। আগামী ১১ ও ১২ মার্চ দুদিনব্যাপী সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। এর মধ্যে দুপুর ১টা থেকে দুইটা পর্যন্ত বিরতি।
সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২০-২১ বর্ষের নির্বাচনকে সামনে রেখে জমে উঠেছে আদালত প্রাঙ্গণ। সবার মধ্যেই বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। নির্বাচনে কি জিতবে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মনোনীত সাদা প্যানেল না জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অর্থাৎ বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল তা নিয়ে হিসেব নিকেশ শুরু হয়েছে।
জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা বলেন, এবারের নির্বাচনে অতীতের যে কোন বারের চেয়ে বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
সাদা প্যানেলের সভাপতি প্রাথী এ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার সুপ্রীমকোর্ট বারের জন্য ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা অনুমোদন দিয়েছে। সাধারণ আইনজীবীদের কল্যাণের জন্য কাজ করছি। গত বছর সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়ে ৭০ ভাগ কাজ করেছি। এবার নির্বাচিত হলে বাকি কাজ করব। উন্নয়নের বিষয়ে আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ। আশা করি উন্নয়নের পক্ষেই আইনজীবীগণ ভোট প্রদান করবেন। আমার সঙ্গে যারা আছেন তাদেরও ভোট দেবে। আমি আশা করছি পুরো প্যানেল নির্বাচিত হবে।
অন্যদিকে বিএনপিপন্থী নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, মানুষ সারাদেশে ভোট দিতে পারে নাই। আইনজীবীগণ ভোট দিতে পারলে ইনশাআল্লাহ জয়লাভ করব। আমি আশা করছি আমিসহ পূর্ণ প্যানেল নির্বাচনে জয়লাভ করব।
সাধারণ আইনজীবীগণ বলছেন, সুপ্রীমকোর্টের নির্বাচনে ভোটাররা সর্বোচ্চ, শিক্ষিত, দেশপ্রেমিক বিধায় তারা তাদের বিচার বিবেচনার প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। তারা কখনই যুদ্ধাপরাধী অথবা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিকে সমর্থন করবে না। নির্বাচনে সাদা প্যানেল নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করবে।
এবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল ও বিএপি সমর্থিত নীল প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এবার নির্বাচনে ১৪টি পদের (১ সভাপতি, দুই জন সহসভাপতি, ১জন সম্পাদক, ১ জন ট্রেজারার, ২ জন সহসস্পাদক ও ৭জন সদস্য) মধ্যে প্রার্থী রয়েছেন ৩১ জন। তবে বিভেদ ভুলে প্রচারে ব্যস্ত মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাদা প্যানেল।
সাদা প্যানেল
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক পদে এ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হককে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
সভাপতি-সম্পাদক ছাড়াও সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন- এ্যাডভোকেট শাকিলা রৌশন ও মোঃ মনিরুজ্জমান, অর্থ সম্পাদক পদে এ্যাডভোকেট ড. মোঃ এনামুল হক এবং সহ-সম্পাদক পদে মোঃ ইমতিয়াজ ফারুক ও মোহাম্মদ বাকির উদ্দিন ভুঁইয়া।
এছাড়া সদস্য পদে সাত প্রার্থী হলেন- এ্যাডভোকেট মোঃ তারজেল হোসেন, মোঃ সাফায়েত হোসেন সজীব, মোহাম্মদ জগলুল কবির, মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ হুমায়ুন কবির, মিন্টু কুমার মণ্ডল ও মোঃ কামরুজ্জামান।
নীল প্যানেল
এবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে সভাপতি হিসেবে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সিনিয়র এ্যাডভোকেট আলহাজ জয়নুল আবেদীন এবং সম্পাদক পদে মোঃ রুহুল কুদ্দুস (কাজল) কে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও সহ-সভাপতি পদে মোঃ আব্দুল জব্বার ভূইয়া ও মোঃ জালাল উদ্দিন কোষাধ্যক্ষ পদে রাগীব রউফ চৌধুরী, সহ-সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হাসান এবং মোহাম্মদ আয়ুব আলী আশরাফ।
সদস্য পদের মধ্যে রয়েছেন এ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম (খোকন), মার-ই-উম খন্দকার, মোঃ মোহাদ্দেদ উল ইসলাম (টুটুল), মোঃ শফিকুর রহমান, মোহাম্মদ মোহসিন কবির, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন (রতন) ও মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
এদিকে প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে রয়েছেন ড. মোহাম্মদ ইউনুস আলী আকন্দ ও সহ-সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া এবং সদস্য পদে তপন কুমার দাস।
উল্লেখ্য, গত বার সুপ্রীমকোর্ট বার সমিতির নির্বাচনে সভাপতি পদসহ ছয়টি পদ পেয়েছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল। অন্যদিকে সম্পাদকসহ ৮টি পদ পেয়েছিল বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল।