অবৈধভাবে তথ্য পাচার ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।
আজ বুধবার (১৮ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ সময় তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। পরে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস আসামিদের উপস্থিতিতে এ চার্জশিট গ্রহণ করেন।
১৯ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। আদালত ৯ ফেব্রুয়ারি চার্জশিটটির শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
গত ১২ জানুয়ারি দুদকের সভায় এ চার্জশিট অনুমোদন দেয়া হয়। গত বছরের ১৬ জুলাই মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি করেন দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও তিনি।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার থাকাকালে বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেফতার করানোর অভিযোগ ওঠে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে। এছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৯ সালের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।
এরপর ওই বছরের ২৪ জুন সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এর অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।
মামলার তদন্ত চলাকালে ডিআইজি মিজান অভিযোগ করেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে রেহাই দিতে দুদকের পরিচালক এনামুল বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
এ অভিযোগ ওঠার পর বাছিরকে সরিয়ে দুদকের আরেক পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ফানাফিল্যাকে প্রধান করে তিন সদস্যের দলকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। তদন্তকালে উভয়ের অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তথ্য পাচার ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পর ডিআইজি মিজানকে পুলিশ থেকে এবং পরিচালক বাছিরকে দুদক থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।