যেসব লোকজন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন সেসব বাড়ির সামনে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ঝোলানোর পদক্ষেপ গ্রহণে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার (১৮ মার্চ) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব আসাদুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব শহিদুজ্জামান এবং রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনন্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনার প্রভাব এখন বাংলাদেশেও। করোনায় আক্রান্ত হওয়া ১০ জনের বেশিরভাগ বিদেশফেরত এবং বাকিরা তাদের দ্বারা সংক্রমিত। পরিস্থিতি বিবেচনায় এটা প্রতীয়মান যে, আমাদের দেশে বিদেশফেরত প্রবাসীরাই মূলত করোনায় আক্রান্ত এবং তাদের মাধ্যমে বাকিরা আক্রান্ত হচ্ছে।
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিন করার কথা বলেছে। হোম কোয়ারেন্টিন তার জন্য, যিনি এখনও পজিটিভ হননি। আইইডিসিআর’র তথ্য অনুযায়ী, ৯-১৭ মার্চ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত ৬০টির বেশি দেশ থেকে ১ লাখ ৪ হাজার জন দেশে ফেরত আসে। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে ৫৯ জেলায় ২ হাজার ৮৯৫ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এই মুহূর্তে সারাদেশে আইসোলেশনে আছেন ১৬ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৩ জন।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, পত্র-পত্রিকা মারফত জানা যাচ্ছে যে, আমাদের দেশে হোম কোয়ারেন্টিনের নিয়ম যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না। এখানে রোগী যেমন হোম কোয়ারেন্টিনের কোনও নিয়ম তোয়াক্কা করছে না, তেমনি সরকারের পক্ষ থেকে কাগজে-কলমে হোম কোয়ারেন্টাইনের কথা বললেও বাস্তবে এর কোনও সঠিক তদারকি দেখা যাচ্ছে না। এরূপ পরিস্থিতিতে হোম কোয়ারেন্টিনে বিষয়টি যদি সঠিকভাবে তদারকি না করা হয় তাহলে করোনা ভাইরাসটি সারাদেশে ছড়িয়ে যাওয়ার গভীর আশঙ্কা রয়েছে। যার ফলাফল হবে আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য ভয়াবহ। এক্ষেত্রে, হোম কোয়ারেন্টাইনের সঠিক তদারকির পাশাপাশি সরকারকে উপযুক্ত হারে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে হবে।
যেহেতু করোনা ভাইরাস সংক্রামক রোগ, সেক্ষেত্রে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বাড়ির সামনে সতর্কবার্তা (সাইনবোর্ড) দিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সতর্কবার্তার মধ্যে এটি উল্লেখ করা যেতে পারে যে, হোম কোয়ারেন্টিন মানেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নন। যাতে তিনি/তারা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন না হয়। পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালু রাখতে হবে।
নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী বলেন, নোটিশ গ্রহীতাদেরকে এই নোটিশ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনের সঠিক তদারকি, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা, হোম কোয়ারেন্টিনে যারা আছেন সেই বাড়ির মূলফটকে সতর্কবার্তা এবং সাইনবোর্ড ঝোলানোসহ সেই বাড়ি বা ঘরকে হোম কোয়ারেন্টিন হিসেবে ঘোষণা করে জনসচেতনামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে রিট দায়ের করা হবে।