আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি না থাকার পরও নিজেকে ‘আইনজীবী’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া এক নারী টাউটকে আটক করেছে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি। চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে হাসনা বেগম নামের ওই নারী টাউট গতকাল সোমবার (২৩ মার্চ) হাতেনাতে ধরা পড়েন। আটকের পর ওই নারীর বিরুদ্ধে আইনজীবী পরিচয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সদস্য রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, মামলা করিয়ে দেবেন, আসামি ধরিয়ে দেবেন, খালাস করিয়ে দেবেন, মামলা নিষ্পত্তি করিয়ে দেবেন— এ ধরনের নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা নেন তিনি। এভাবেই চট্টগ্রাম আদালতে ঘুরে ঘুরে প্রতারণা করেন বিচারপ্রার্থীদের সাথে। মামলা পরিচালনা করবেন জানিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে টাকা আত্মসাত করে আসছেন। এছাড়াও চুক্তিভিত্তিক আসামিদের খালাস করে দেওয়ার কথা জানিয়েও টাকা নিয়েছেন অনেকের কাছ থেকে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমরুল হক মেনন বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট সচেতন হওয়ার পরও আদালত ভবনে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। আইনজীবী পরিচয় দেওয়া এসব টাউটরা ভুয়া জামিনবন্ড, জামিননামা তৈরি করে বিচারপ্রার্থীদের সাথে প্রতারণা করছে। এ ঘটনায় কিছু অসাধু আইনজীবীও জাড়িত আছে।’
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে ধৃত হাসনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে আদালত প্রাঙ্গণে বিভিন্ন বিচারপ্রার্থীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। সোমবার বিকেলে আসামিদের হাজতখানার সামনে তাকে দেখতে পান আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার। এরপর তাকে ধরে সমিতি কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে হাসনা বেগম তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বলে স্বীকারোক্তি দিলে চট্টগ্রাম বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বাদি হয়ে হাসনা বেগমকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
কোতোয়ালী থানার কর্তব্যরত অফিসার জানান, এ বিষয়ে আইনজীবী সমিতির মাধ্যমে একটি লিখিত এজাহার এসেছে। তবে বিষয়টি এখনও মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলা যায়। অভিযুক্ত হাসনা বেগম আটক আছেন।