তানজিম আল ইসলাম:
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকার সাধারন ছুটি বর্ধিত করেছে। সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনও সাধারন ছুটি ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। এ ছুটি সুপ্রিমকোর্ট এবং অধ:স্তন আদালতের জন্য প্রযোজ্য হবে। এ ছুটি বর্তমান করোনা পরিস্থতিতে ইতিবাচক সিদ্ধান্তই বলা যায়। তবে এ ছুটির মধ্যেও কিছু বিষয়ে স্পষ্টীকরণ দরকার। না হলে অসংখ্য বিচার প্রার্থীদের জন্য ভোগান্তি হয়ে দাড়াবে। বিশেষ করে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি, বিভিন্ন মামলায় স্টে এবং স্ট্যাটাসকো বিষয়ে জটিলতা দূর করা প্রয়োজন। এছাড়া চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত ফাইলিং এর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। এ জন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে কিছু সুনির্দিষ্ঠ প্রস্তাবনা রাখছি।
প্রথমত হাইকোর্ট বিভাগে যেসব জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং এ ছুটিতে শেষ হয়ে যাবে সেগুলো অটো এক্সটেনশন হবে মর্মে ঘোষনা আসা দরকার। এছাড়া যে স্টে আদেশ এবং স্ট্যাটাসকো আদেশ এর মেয়াদ ও এ ছুটির মধ্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে সেগুলো অন্তত তিনমাস অটো এক্সটেনশন হয়ে যাবে মর্মে ঘোষনা আসা দরকার।
দ্বিতীয়ত, হাইকোর্ট বিভাগে জামিন এবং স্টে মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে অনেক সময় অধ:স্তন আদালত তা আর বর্ধিত করতে চাননা। এক্ষেত্রে এ ছুটির মধ্যে যেসব জামিন এবং স্টে আদেশ শেষ হয়ে যাচ্ছে সেগুলো অধ:স্তন আদালত ছুটি শেষ হওয়ার পর আরও তিনমাস পর্যন্ত সময় আবেদন মঞ্জুর করার আদেশও জারি করা প্রয়োজন।
তৃতীয়ত, চেক ডিজঅনার সংক্রান্ত মামলা দায়েরের যেহেতু একটি নির্দিস্ট সময় সীমা থাকে এবং এক্ষেত্রে কোন তামাদি আইনও পযোজ্য হয়না সেক্ষেত্রে যেসব ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গুলো জরুরি কাজে খোলা রাখা হয়েছে সে আদালত গুলোতে ফাইলিং করার ও সুনির্দিস্ট আদেশ হওয়া প্রয়োজন। এসব মামরা ফাইলিং এর ক্ষেত্রে আইনজীবীগন তাদের নথি উপযুক্ত দলিল সহ দাখিল করলে বিচারক তা যাচাই বাচাই করে ফাইলিং আমলে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আরজীতে লেখা বিবৃতি জবানবন্দী হিসেবে গ্রহন করতে পারেন। প্রয়োজনে জবানবন্দী বিষয়ে পরবর্তী একটি তারিখ রেখে দিতে পারেন। এতে অন্তত মামলা করার সময়সীমার অভাবে নষ্ট হয়ে যাবেনা।
মাননীয় প্রধান বিচারপতির নিকট এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করার নির্দেশ দান করার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল এবং আশাকরি উল্লিখিত বিষয়ে জটিলতা এড়ানোর জন্য সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন কালবিলম্ব না করে প্রজ্ঞাপনটি জারি করবেন।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।