রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিল্লাহ ফার্মা ও খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় ডাকাতির দায় স্বীকার করে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন; মোঃ সোহেল (২৮), আক্তার হোসেন সোহরাব (২২) ও মো. শাওন হোসেন শাহীন (২০)।
এছাড়াও লুন্ঠিত ল্যাপটপ নিজ হেফাজতে রাখার অভিযোগে মেহেদী হাসান রাজু এবং উক্ত ল্যাপটপ ক্রয়ের চেষ্টার অভিযোগে শিক্ষার্থী মোঃ নেওয়াজ নামক অপর সন্দেহভাজন আসামীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
শিক্ষার্থী ও সন্দেহভাজন বিবেচনায় আসামী নেওয়াজকে জামিন দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৫ এপ্রিল) ০১ (এক) দিনের রিমান্ড শেষে তাদের ০৫ (পাঁচ) জনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রউফ তিনজনের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দিদার হোসাইন ০৩ (তিন) জনের জবানববন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপরদিকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নেওয়াজ ও মেহেদী হাসান রাজুকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় মেহেদী হাসান রাজু এবং মোঃ নেওয়াজের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দিদার হোসাইন শিক্ষার্থী ও সন্দেহভাজন বিবেচনায় আসামী মোঃ নেওয়াজের জামিন মঞ্জুর করেন এবং অপর আসামী মেহেদী হাসান রাজুর জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মোহাম্মদপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় কর্মরত পুলিশের কনস্টেবল আব্দুল হামিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে সোমবার (১৩ এপ্রিল) মোহাম্মদপুর থানার ডাকাতি মামলায় তাদের পাঁচজনের ০১ (এক) দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রোববার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দলের মূলহোতা মোঃ সোহেল, সহযোগী মো. আক্তার হোসেন সোহরাব ও মোঃ শাওন হোসেন শাহীন; লুন্ঠিত ল্যাপটপের ধারক ও বাহক মেহেদী হাসান রাজু এবং সন্দেহভাজন মোঃ নেওয়াজ। এ সময় মূল আসামীদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপ, চাপাতি, দা, লোহার রড এবং নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। আসামী মেহেদী হাসান রাজুর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় লুণ্ঠিত একটি ল্যাপটপ। গোয়েন্দা পশ্চিম বিভাগের পল্লবী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শাহদাত সোমা ও মোহাম্মদপুর জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আনিছউদ্দিনের নেতৃত্বের পৃথক অভিযানে রোববার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত ১ এপ্রিল রাত আনুমানিক পৌনে ১টার দিকে মোহাম্মদপুর কলেজগেটের বিল্লাহ ফার্মা ও ৫ এপ্রিল খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় একই স্টাইলে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তারা প্রথমে একটি পিকআপে করে মুখে মাস্ক ও গামছা পেঁচিয়ে আসে। ফার্মেসিতে গিয়ে চাপাতি, দা ও লোহার রডের ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পশ্চিম বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম ও পল্লবী জোনাল টিম মামলা দুটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। ডিবি পুলিশ জানায়, লাজ ফার্মায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে রোববার চক্রের মূলহোতা সোহেলসহ অন্যদের গ্রেফতার করা হয়।