চন্দন কান্তি নাথ:
পৃথিবী বদলেছে, বদলেছে বাংলাদেশ। WHO (World Health Organisation) আন্তর্জাতিক সম্মেলন করছে ভার্চুয়ালে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে পৃথিবীর সব জায়গায় ভার্চুয়াল যোগাযোগের জয় জয়কার। দেশে ও বিদেশে প্রতিদিন হাজার হাজার সম্মেলন হচ্ছে ভার্চুয়ালে। বাংলাদেশ ও পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করার জন্যে এরূপ পরিস্থিতির অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত। কেন না ডিজিটাল মাধ্যম মৌলিক অধিকার পূরণের অন্যতম হাতিয়ার।
আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ তে আছে, “রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদন শক্তির ক্রমবৃদ্ধিসাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতিসাধন, যাহাতে নাগরিকদের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্জন নিশ্চিত করা যায়:
(ক) অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা…”
বর্তমানে ডিজিটাল মাধ্যম উপরে উল্লেখিত মানুষের মৌলিক উপকরণ পূরণের সহায়ক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেয়ার উপায় হিসাবে সারা দেশের ৪ হাজার ৫৪৭টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৩২১টি পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনের ৪০৭টি ওয়ার্ড কার্যালয়ে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেছে। এসব ডিজিটাল সেন্টারে প্রতিদিন শত শত মানুষ নাগরিক জীবনের দৈনন্দিন কাজকর্মের চাহিদা অনায়াসে পূরণের সুযোগ পাচ্ছেন। একদিন বাংলাদেশ একটি সুখী-সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, বৈষম্যহীন জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত হবে এবং এর সব ধরনের চালিকাশক্তি হবে ডিজিটাল পদ্ধতি। মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনগণের সম্পৃক্ততা এবং দৈনন্দিন জীবনে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের কার্যক্রমে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, অ্যানড্রয়েড মোবাইল এবং বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপসের ব্যবহার হচ্ছে ব্যাপকভাবে। সারা দেশে ফাইবার অপটিক্যাল লাইন স্থাপনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) তাদের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৭২ হাজার। অথচ সরকারি হিসাবে বাংলাদেশের জনগণ ও ১৬ কোটি এর কিছু বেশী। অর্থাৎ প্রায় সব পরিবারই মোবাইল ব্যবহার করছেন। আবার বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৯ কোটি ৩৬ লাখ ৮১ হাজার।এখন প্রায় জীবনের সব ক্ষেত্রে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ ব্যবহৃত হচ্ছে। শিক্ষা, কৃষি, চিকিৎসা, খাদ্য, পোশাক, ব্যবসা – বাণিজ্য, আইন, সংস্কৃতি, যোগাযোগ, বিদেশ যাত্রা, ব্যাংক, বিমা, উৎসব, বাসস্থান, সরকারি বেসরকারি সেবা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে মোবাইল, ইন্টারনেট ও অ্যাপ এর মাধ্যমে তথ্য পাচ্ছে ও কাজ হচ্ছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের বাস্তবায়নের জন্য সরকার চারটি সুনির্দিষ্ট বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে; সেগুলো হচ্ছে—মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনগণের সম্পৃক্ততা, সিভিল সার্ভিস ও দৈনন্দিন জীবনে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত সরকারী কর্মকর্তা দের সাথে ভিডিও conference করছেন। সরকারের সেবা গুলো ও এই মুহূর্তে ডিজিটাল উপায়ে জনগণের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা হচ্ছে। মানুষ ব্যাপক হারে ভিডিও অ্যাপসের এর মাধ্যমে একজন আরেকজনের সাথে দেশে ও বিদেশে কথা বলছেন এবং ব্যাপক হারে ফেসবুক ও টুইটার ব্যবহার করছেন।
বিচার বিভাগও এই কার্যক্রমের বাইরে নেই। ইতিমধ্যে সব বিচারককে ল্যাপটপ পৌঁছানো ও ইমেইল এ যোগাযোগ করার উপায়সহ Judicial portal তৈরীর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কিভাবে সাক্ষী ডিজিটাল মাধ্যমে নেয়া যায় তার প্রক্রিয়া ও পাইলট প্রজেক্টের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। সুপ্রীম কোর্ট এ অনলাইন কজ লিস্ট এবং ছুটির দরখাস্ত অনলাইন এ হচ্ছিল। প্রায় সব বিজ্ঞ আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট বিচারকগণ সবাই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করছেন। স্মার্ট ফোন গুলোতে একটা ইমেইল ছাড়া প্রয়োজনীয় অ্যাপস ইন্সটলই হয় না। play store এ বিভিন্ন আইনের অ্যাপস রয়েছে। অনেক আইনজীবী ও বিচারক তা ব্যবহার করছেন। সরকারী কর্মকর্তাদের বেতন পুরোপুরি অনলাইন এ হচ্ছে। আগামী জুন থেকে সরকারী কর্মচারীদের বেতন ও অনলাইন এ হবে। Law of Bangladesh এর ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের প্রায় সকল আইন পাওয়া যাচ্ছিল। বলা হচ্ছে- যা নাই ভূগোলে তা আছে গুগলে।
আবার আইন মন্ত্রণালয় এর ওয়েবসাইট সহ সকল সরকারি ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেট দিচ্ছে। বিজ্ঞ আইনজীবীদের Bar Council এর ওয়েবসাইট হতে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের নিয়মিত আপডেট দিচ্ছে। সুপ্রীম কোর্ট এর ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন সার্কুলার নোটিশ আকারে নিয়মিত দেয়া হচ্ছে। কয়েকজন বিজ্ঞ আইনজীবী DLR, MLR, ADC ইত্যাদির সংকলন করে মাসিক চাঁদা এর ভিত্তিতে অনলাইনে ব্যবহার এর সুযোগ দিচ্ছেন। বর্তমানে সাক্ষীর জন্যে সহজে পুলিশ ও যে কোনো সরকারী সংস্থা ও কর্তাকে সরকারি মোবাইলে, ইন্টারনেটে ও ইমেইলে পাওয়া যায়। মোবাইল নাম্বার অনেক ক্ষেত্রেই দেয়া থাকায় সাক্ষীদের সহজে পাওয়া যায়। দেওয়ানি আইনে সমন জারিতে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার এর জন্যে আইন সংশোধন হয়েছে। অধিকাংশ দরখাস্ত এখন কম্পিউটার টাইপ হয়। ভয়েস অ্যাপ এর মাধ্যমে টাইপ করা যায়। কিভাবে সম্পত্তি ফরাএজ মোতাবেক ভাগ করা যায় তার অ্যাপ ও সরকার করেছেন এবং নতুন সিজেএম বিল্ডিং এ ডিজিটাল মিটিং রুম এর ব্যবস্থা করেছেন।
তবু হাতে লেখা পরোয়ানা, সমন ইত্যাদি প্রেরণের পরিবর্তে ইকমিউনিকেশনের মাধ্যমেও সেসব দ্রুত পাঠানো ও জারি করা এবং জারির রিপোর্ট অনলাইন এ পাঠানো যেতে পারে। দীর্ঘদিন NER (Non Executing Report), P&A না আসায় মামলা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দেরী হয়। নিম্ন আদালতে ডিজিটাল কজ লিস্ট ও আদেশ ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে না। সাক্ষ্য আইনে, দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে প্রাসঙ্গিক সংশোধন হয় নি। বিষয়গুলোর প্রতি সরকার ও মাননীয় সুপ্রীম কোর্ট শীঘ্রই নজর দিবেন আশা করা যায়। ইতিমধ্যেই সাক্ষ্য আইনে, দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে প্রাসঙ্গিক সংশোধন প্রক্রিয়াধীন বলে মাননীয় আইন মন্ত্রী ঘোষণা করেছেন।
আবার আমরা জানি যে সাক্ষীরা দূর থেকে আসে বিধায় দিনের পর দিন সাক্ষীর জন্যে মামলা পড়ে থাকে। বিশেষ করে করোনা এর কারণে বিচার ব্যবস্থাই বন্ধ হয়ে যায়। অনেক আসামী জামিনের আবেদন করতে না পেরে কারাগারে অমানবিক জীবন যাপন করছিলো। আবার দুর্ধর্ষ অপরাধীদের কারাগারে রেখে বিচার করার চিন্তাও দীর্ঘ দিন করা হচ্ছিল। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের যে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়েছে তার কার্যক্রম আদালতে প্রয়োগের একটা সুবর্ণ সুযোগ তৈরী হয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগ এর জন্যে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কোর্ট পরিচালনার এর জন্যে সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে।
সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, “ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাই থাকুক না কেন, যেকোনো আদালত এই অধ্যাদেশের ধারা ৫ এর অধীন জারিকৃত প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) সাপেক্ষে, অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষরা বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীর ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে যেকোনো মামলার বিচার বা বিচারিক অনুসন্ধান বা দরখাস্ত বা আপিল শুনানি বা সাক্ষ্যগ্রহণ বা যুক্ততর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় প্রদান করতে পারবে।”
এ অধ্যাদেশ আরো বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলেই তা সশরীরে আদালতে উপস্থিতি হিসেবে গণ্য হবে।অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষ বা তাদের যে কোনো সরকারী সংস্থা ও কর্তা কে বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীর ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি বা ক্ষেত্রমতে দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসরণ করতে হবে|অধ্যাদেশর ক্ষমতা বলে ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম কীভাবে চলবে সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই আপিল বিভাগের জন্য ১৩ দফা, হাইকোর্টের জন্য ১৫ দফা এবং অধস্তন আদালতের জন্য ২১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রীম কোর্ট।
নির্দেশিকা মোতাবেক ভার্চুয়াল আদালতে বাদী/বিবাদীর পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য একজন আইনজীবীকে নিজের নাম, ছবি, ইমেইল ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন ও অন্যান্য কাজটি হবে ভার্চুয়াল আদালতের ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে। রেজিস্ট্রেশন হওয়ার পর ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আইনজীবী ভার্চুয়াল কোর্ট পোর্টালে ঢুকতে পারবেন। সেখানে জামিন আবেদন ও বেইল বন্ড দাখিল সংক্রান্ত দুটি ঘর থাকবে। উল্লেখ্য যে অনেক আইনজীবী ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন |
আবার কোনো আইনজীবী জামিন আবেদন করতে চাইলে জামিন সংক্রান্ত ঘরে প্রবেশ করে মূল জামিন আবেদন, ওকালতনামা ও সংযুক্ত নথিপত্র পৃথক তিন ধাপে আপলোড করবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো আবেদন ফি লাগবে না। আবেদন দাখিলের পর সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কর্মকর্তা এ আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করবেন। সংশ্লিষ্ট বিচারকের অনুমোদনের পর আইনজীবীর ইমেইলে শুনানির সময় জানিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের জন্য একটি লিংক দেয়া হবে। নির্ধারিত সময়ে ওই লিংকে ঢুকে আইনজীবী বিচারকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন এবং নিজের আবেদনের ওপর শুনানি করবেন। জামিন মঞ্জুর হলে একই পোর্টালে বেইল বন্ড দাখিল করতে পারবেন আইনজীবী। আদেশ ও আইনজীবীকে ইমেইলে জানিয়ে দেয়া হবে।
আইনের মর্ম মতে, আইনজীবীর স্মার্ট মোবাইল ফোনটিতে জুম বা মাইক্রোসফট টিম নামক ভিডিও কনফারেন্সিং সফটওয়্যারটি ও ইন্সটল করে নিয়ে সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্র ওই মোবাইলেই ছবি তুলে CamScanner বা অন্য কোনো সফটওয়্যার প্লে-স্টোর থেকে ইন্সটল করে পিডিএফ করে ইমেইলে সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়া যায়। এ কাজটি খুবই সহজ এবং জুনিয়র আইনজীবীরা ও যে কেউ একবার শিখে নিলে সহজে কাজটি করতে পারেন। বর্তমানে অনেকেই immo, whatup, messenger বা অন্যে মাধ্যমে ভিডিও কল করছেন। আইন অনুসারে আপাততঃ অনুরোধ করে স্থানীয় পর্যায়ে উক্ত মাধ্যম গুলোতেও কোর্ট এর নামের একাউন্টে ভিডিও শুনানি করতে পারেন। UNDP ও সরকার যৌথ ভাবে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সব জেলায় অনেক বিচারক ও আইনজীবীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ফেসবুক ও অনলাইনে, ইউটিউবে সহজেই যেকেউ কয়েক মিনিট ব্যয় করে নিয়মটি অতি সহজেই রপ্ত করতে পারেন। এমন কি ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশোন ওয়ার্ডে গিয়ে যে কেউ নিয়মটি রপ্ত করতে পারেন। অনেক আদালতের তরুণ আইনজীবী ও বিচারক পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারেন। আইনজীবীরা নিজেদের বারে কিংবা অনলাইন এ ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করতে পারেন। UNDP এতে প্রয়োজনীয় সাহায্যে করবে বলেই মনে হয়। সুপ্রিম কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনার জন্যে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ কার্যালয়ের আইনজীবীদের নিয়ে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউএনডিপির কর্মকর্তা ও জেন্ডার এক্সপার্ট বিথিকা হাসান বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ট্রেনিংয়ে সহযোগিতা করেছি। এটা সিরিজ ট্রেনিং চলছে। আগামীতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদেরও ট্রেনিংয়ে সহযোগিতা করব। সবমিলিয়ে (লোয়ার কোর্ট) বিচারিক আদালতে সিরিজ অব ট্রেনিং অব্যাহত রয়েছে।’
এরই প্রেক্ষিতে অনেক আসামীদের বিজ্ঞ আইনজীবীরা ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন করান। তবে আদালত এর সব কাজ পুরোদমে চালু না হওয়াতে সব আইনজীবী কাজে যোগ দিতে পারবেন বিষয়টি এমন নয়। তবে এই বিষয়ে Resolution নিয়ে জনগণ ও অনেক বিজ্ঞ আইনজীবীকে কাজ করতে না দেয়া সাংবিধানিক ও আইন মোতাবেক কোনোভাবেই বিজ্ঞদের কাছ থেকে কেউ আশা করে না। তাই ইতিমধ্যেই অনেক কোর্ট এর বিজ্ঞ আইনজীবীরা এরূপ Resolution প্রত্যাহার করেছেন।
তবে ভার্চুয়াল প্র্যাকটিস বাংলাদেশে এই প্রথম। যখন আদালতে এই পদ্ধতিতে ব্যবহারিক কাজ শুরু হয়ে চলবে তখন এর সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে। আইনজীবীরা কিভাবে এতে অভ্যস্ত হবেন এবং তাঁদের সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে শোনা দরকার। সমাধান হলে কোনো বিরোধিতা হবে না এটাই সাধারণ মানুষ আশা করে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই মাধ্যমে অন্য বিষয়গুলো ও শুনানি হবে ধরে নেয়া যায়। কেনো না এটা অস্বীকার করার উপায় নাই যে ডিজিটাল বাংলাদেশে ভার্চুয়াল এ কোর্ট পরিচালনাই এই মুহূর্তে বাস্তবতা।
চন্দন কান্তি নাথ: সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কুমিল্লা।