শেখ মো: আবুল হাসনাত বুলবুল:
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল স্বায়তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসাবে আইনজীবিদের তালিকাভূক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে থাকে। আইন অঙ্গনের অভিভাবক এ প্রতিষ্ঠানটি নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনানু্যায়ী প্রতি বছর আইনজীবি তালিকাভুক্তি পরীক্ষা নেবার বিধান থাকলে এ কাজটি সুচারুরুপে সম্পন্ন করতে পারেনি বিধায় সৃষ্টি হয়েছে আইন বিষয় অধ্যয়তরন ছাত্রছাত্রীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত।
শিক্ষানবিশ আইনজীবিদের কেউ বিগত ১০ বছর, কেউ ৭ বছর আবার কেউ ৫ বছর যাবৎ শিক্ষানবীশ হিসেবে মহান আইন পেশায় বাংলাদেশের বিভিন্ন বার এসোসিয়েশনে আইনজীবিদের সহচর্যে থেকে অত্যন্ত স্বল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে সেবা প্রদান করে আসছে। অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত চিত্তে বাংলাদেশের শিক্ষানবীশ আইনজীবীগন এক চরম সংকটময় সময় অতিবাহিত করছে।
সারা পৃথিবীতে এই করোনা ভাইরাস নামক মহামারীর কারনে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাপন অতিবাহিত করছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধন না থাকায় বার কাউন্সিল কিংবা বার এসোসিয়েশন থেকে আর্থিক, মানসিক ও আইনগত অধিকার থেকে সম্পূর্ণরুপে বঞ্চিত দেশের প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষানবিশ আইনজীবি। এমন পরিস্থিতিতে অদৃষ্টের নির্মম পরিহাসে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনের কারনে বা অতিরিক্ত কঠোর পরীক্ষা পদ্ধতি চলমান থাকায় বা ৩/৪ বছর পর পর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় জীবনের অনেক মূল্যবান সময় আইন পেশায় তালিকাভূক্তির পূর্বেই হরিয়ে যাচ্ছি। মহামারির কারনে বর্তমানে এক সংকটময় সময় আমরা অতিবাহিত করিতেছি এবং এর সময়কাল আমাদের সকলেরই অজানা।
সকল পরীক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্য ঢাকায় জড়ো হলে তাদের থাকার জন্য কোন প্রকার বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না এবং এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সংশ্লিষ্ট সকলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কঠোর অধ্যাবসয়ের মাধ্যমে কেউ ২০১৭ সালে আবার কেউ বা ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এম সি কিউ পরীক্ষায় তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পাশ করেছে,তাদের পরবর্তী লিখিত পরীক্ষা মহামারির কারনে মওকুফ করে ভাইভা নিয়ে অথবা গেজেট করে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভূক্তির অবশ্যই যুক্তিসংগত।
জাতির জনকের কন্যা,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিগত ২০১৩ সালে ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কে জাতীয়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছিলেন এবং বর্তমানে ও করোনা মহামারীর কারণে ডাক্তার ও নার্স স্পেশাল ভাবে নিয়োগ দিয়ে অন্যান্য নজীর সৃষ্টি করছেন যা বাংলাদেশে ইতিহাসের পাতায় আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।স্বাধীনতা পরিবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বার কাউন্সিলের আইনজীবি তালিকাভুক্তির ব্যাপারে শিথিলতা নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। ২০১৭ ও ২০২০ সালে তুমুল প্রতিযোগীতা করে এমসিকিউ পরীক্ষায় পাশ করা শিক্ষা নবীশ আইনজীবীদের কে বর্তমানে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে লিখিত পরীক্ষা ছাড়া সনদ দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।এতে যেমন বার কাউন্সিলে নিয়মিত তালিকাভুক্তির পরীক্ষার সৃষ্ট জটিলতা নিরসন হবে।
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রে শিথিলতা ওমানবিক দিক বিবেচনাপূর্বক অতি দ্রুত প্রতিটি বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার সনদ প্রদান করে এ অভিশাপ থেকে মুক্তি দিন।আপনারাই পারেন আমাদের বেকারত্বেরে অভিশাপ ও মা বাবার শেষ স্বপ্ন বাস্তবে রুপান্তরিত করতে।আপনারাই এ জাতি তথা আইন অঙ্গনের অভিভাবক।অনুগ্রহপূর্বক কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এম.সি.কিউ উত্তীর্ণ ২০১৭ ও ২০২০ সালের শিক্ষানবিশ আইনজীবিদের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে সনদ প্রদান করা ও প্রতি বছর নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়ার আকুল আবেদন রইলো ।
শেখ মো:আবুল হাসনাত বুলবুল : শিক্ষানবিশ আইনজীবী