মোকাররামুছ সাকলান:
ভার্চ্যুয়াল কোর্টের ওকালতনামা ক্রয়ের জন্য আইনজীবী সমিতি অফিসে যাবার প্রয়োজন নেই। অনলাইনে কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরণ করলে ওকালতনামা ঘরে বসে ক্রয় করা সম্ভব।
- যে আইনজীবী ওকালতনামা ক্রয় করবেন তিনি প্রথমে নিজের ই-মেইল থেকে নিজের নাম, আইডি নম্বর ফোন নম্বর পিটিশনারের নাম লিখে বারের প্রদত্ত ই-মেইল আইডিতে মেইল করবেন।
- বার ফিরতি মেইলে ওকালতনামার জন্য একটি রেফারেন্স নম্বর পাঠিয়ে দেবে।
- আইনজীবী সেই রেফারেন্স নম্বর উল্লেখ করে বারকে ওকালতনামার টাকা বিকাশে ঠিয়ে দেবে।
- বার টাকা পেয়ে ওকালতনামা কেনা হয়েছে তার কনফার্মেশন ফিরতি মেইলে জানিয়ে দেবে।
- এই কনফার্মেশন মেইলটা মক্কেল এবং আইনজীবীর সই করা ওকালতনামার সাথে পিডিএফ (pdf) হিসাবে এটাচ করে দিলে মামলা ফাইল করতে তো আর কোন বাঁধা নেই।
তাহলে যা দাঁড়ায় তা হল: রিকুইজিশন মেইল—ফিরতি রেফারেন্স মেইল—-বিকাশ—-কনফারমেশন মেইল।
বার যদি আইনজীবীদের কল্যাণ ও সুস্বাস্থ্য চায় তবে এটা করা যেতে পারে। তবে কোর্টের মেইল পাঠানোর মত বার যদি নিরুদ্দেশ হয়ে বসে থাকে তবে আইনজীবীরা ঝামেলায় পড়ে যাবে। এজন্য বারকে ত্বরিত গতিতে ওকালতনামা বিক্রির কাজ করতে হবে। ফৌজদারি (Criminal), দেওয়ানী (Civil) আর রিট (Writ) এর জন্য তিনটা আলাদা ই-মেইল আইডি হলে বারের ঝামেলা কম হবে।
যেহেতু বারের ইনকাম ধরে রাখা প্রয়োজন তাই বার এই ব্যবস্থা করলে একটা ওকালতনামার টাকাও মিস হবে না। বারের প্রয়োজনে বার স্টাফ নিয়োগ করবে। পুরো সিস্টেমটাকে অটোমেটিক করা যায়। বার এসোসিয়েশন উদ্যোগ নিলে ভাল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের সহযোগিতা নিলে এক সপ্তাহের মাঝে এটা ডেভেলপ করা সম্ভব। অনেক সফটওয়্যার কোম্পানির কাছে রেডিমেড এমন সফটওয়্যার পাওয়া যেতে পারে।
বারের ডিজিটাল ব্যানারের মত কিছু সু-উদ্যোগ আর সফটওয়্যার ডেভেলপের জন্য কিছু টাকা খরচ যথেষ্ট। এটা একদমই একটা বেসিক ধারণা এর সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। ভাল উদ্যোগ নিলে তার বাস্তবায়নে কিছুটা ঝামেলা প্রথমে থাকলেও পরে তা শুধরে নেওয়া যায়।
এছাড়াও বিকাশ, নগদ, বা রকেট এর মত ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ওয়ালাদের কাছে এই ধরনের রেডিমেড সল্যুশনস থাকে। তাদের সাথে কথা বলা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির জরুরি বৈঠকে নির্বাহী কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওকালতনামায় আইনজীবী সমিতির সিল ছাড়া ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভার্চুয়াল আদালতে মামলা দায়েরকারী সদস্যদের অবশ্যই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কাউন্টার থেকে অবিলম্বে কিনতে হবে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রেরণ করতে হবে। এখন থেকে, সদস্যদের অবশ্যই কোনো নতুন মামলা ফাইলিংয়ের আগে ওকালতনামার জন্য আগে বার সিলটি কিনতে হবে। যেহেতু ওকালতনামা বিক্রি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির আয়ের প্রধান উত্স সেজন্য সমিতির সকল সদস্যদের সহযোগিতা চেয়েছেন নির্বাহী কমিটি।
লেখক- অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।