মোঃ ইমরান হোসাইন রুমেল:
“একটু রোজগার করতে পারলেই একান্নবর্তী পরিবার থেকে সবাই আলাদা যায়। একতা কি জিনিস ভুলে যায়। গ্রামের শেকড় ভুলে যায় গর্বের সাথে, অথচ গ্রাম থেকে আসা বছরে দুই-চার বস্তা ভর্তি আম কাঠাল বা চাল/মুড়ির কি বরকত সেটা বুঝতে চায়না। ছুটিতে কক্সবাজারের পাঁচ তারকা হোটেলে খরচ না করে গ্রামের বাড়িতেও যে বেড়ানো যায় সেটা বুঝতে চায়না। আগে মানুষ কয়েক বছরে এক আধবার লাক্সারি ট্যুর দিতো। আর এখন প্রতি বছর লাখ টাকা খরচ করে ইন্সটলমেন্টে হলেও দেশ-বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছে দুইটা ফটো তোলার জন্য”। সবার মতো আইনজীবীরাও এইরকম জীবন যাপনে অভ্যস্ত হওয়ায় আজ সবাই হতাশ আমরা।
করোনা পরিস্থিতি আসার পরই আমরা মধ্যবিত্তরাই দরিদ্র মানুষের জন্য বেশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মধ্যবিত্তরাই সবচেয়ে বেশি সজাগ পাহাড়াদার বনে যায় দরিদ্র মানুষদের সহযোগিতার জন্য। অথচ আজ লোক দেখানো বাবু সাব সেঁঝে বসে থাকা মধ্যবিত্তরাই চাকুরীচুত্য, ব্যবসাহীন, অর্থহীন যার কারণে তারাই আজ ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
সমাজে কেবল অর্থ কেন্দ্রীক আনন্দ যারা খুঁজে বেড়াই তারাই আজ করোনার কাছে ধরাশায়ী। আয় নেই তাই সব বন্ধ, কিন্তু আমরা যদি সামাজিক ভাবে ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে নিয়মিত জীবন যাপন করতাম তবে অর্থ ব্যবস্থায়ও একটা ধীরগতি থাকতো। জনগণ যেমন আলোক ছটার মতো ঝলকানি পছন্দ করে তেমনি সরকারগুলোও দীর্ঘ মেয়াদী কোন কার্যক্রম নিতে চায় না। যে কারনে শ্রেণিবৈষম্যটা বেড়েই চলছে।
আইনজীবীদের পেশা হলো স্বাধীন ও সেবাধর্মী পেশা। সমাজের অন্য সকল পেশার মানুষ হতে ভিন্ন বলেই আইনজীবীদের মর্যাদা সবার কাছে আকাশ তুল্য, যদি তিনি সঠিকভাবে সেবা প্রদানের মানসিকতায় আইনজীবী হয়ে থাকেন।
সকল আইনজীবীর প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, সাধারণ মানুষের মত আপনার মতামত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না রেখে আইনজীবীর মতো বিশাল মন নিয়ে জাতির ক্রান্তি লগ্নে কথা বলুন। অন্যদেরকে পথ দেখান, সবাই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার পদ্ধতি জেনে আইনগত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন।
আমাদের অগ্রজ যারা তারা আমাদের সঠিক শিক্ষা দিয়ে যেতে পারলে আমরা একদিন সমাজের হাল ধরে সফল উন্নয়নে অংশগ্রহণ করতে পারবো। তাই হতাশা নয় বুক ভরা আশা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই সকল আইনজীবীর মাঝে।
লেখক: আইনজীবী; সুপ্রীম কোর্ট, বাংলাদেশ।