স্বাভাবিক অবস্থায় নয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে ভার্চ্যুয়াল আদালত চালুর সুপারিশ করে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০’ পাশের পক্ষে মতামত দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।
আজ রোববার (২৮ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিলটি নিয়ে আলোচনা ও বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণের পর এই সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল মজিদ খান, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কমিটি সূত্র জানায়, গত ২৪ জুন কমিটির বৈঠকে বিলটি নিয়ে আলোচনাকালে বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সংসদীয় কমিটির ডাকে সাড়া দিয়ে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, প্রবীণ আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম, আব্দুল বাসেত মজুমদার ও ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনসহ কয়েকজন মতামত দিয়েছেন।
বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০’ এর ওপর আলোচনা করা হয়। এসময় আইনমন্ত্রী দেশে চলমান করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিলটি উত্থাপনের প্রেক্ষাপট, বিলটি প্রয়োগের ক্ষেত্র, সীমাবদ্ধতা, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে এ বিলের সামঞ্জস্যতা ও প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দেন। বিলটি কমিটির উপস্থিত সব সদস্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা মাধ্যমে সংসদে পাসের জন্য সুপারিশ করেন।
তবে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার বিধান সম্বলিত বিলে সংশোধনী আনার সুপারিশ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে ভার্চ্যুয়াল বিচারের কথা বলা হলেও মামলা দায়েরের বিষয়ে কিছু বলা নেই। এজন্য অনলাইনে মামলা দায়ের করা যাবে এ বিধানটি সুপারিশে যুক্ত করা হয়েছে।
বৈঠকে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব নরেন দাস, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন খসরু সাংবাদিকদের বলেন, প্রয়োজনের তাগিদে এই আইনটি প্রয়োগ করার বিষয়ে সংসদীয় কমিটি সুপারিশ করেছে। সেক্ষেত্রে কোনো মহামারী হলো, জরুরি প্রয়োজন দেখা দিল বা নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠলে উচ্চ আদালত আইনের ওই বিধান প্রয়োগ করবে। আগামীকাল সোমবার (২৯ জুন) বিলটি পাসের সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ রেখে গত ৭ মে মন্ত্রিসভা এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেওয়ার পর ভার্চুয়াল আদালতের কাজ শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী অধ্যাদেশটি সংসদে তোলা হয় গত ১০ জুন। আর এ সংক্রান্ত বিলটি উত্থাপন হয় ২৩ জুন। উত্থাপিত বিলে ভার্চুয়াল উপস্থিতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, অডিও-ভিডিও বা অনুরূপ অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির আদালতে বিচার বিভাগীয় কার্যধারায় উপস্থিত থাকা ও অংশগ্রহণ ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি বলে গণ্য হবে।