করোনাকালে শিশু নির্যাতন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমজাকল্যান মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
বৃহত্তর জনস্বার্থে আজ বুধবার (১৫ জুলাই) পপুলেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (পিডিও) -এর পক্ষে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট মোঃ মনিরুজ্জামান (লিংকন) ই-মেইলে এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়, দেশে শিশুদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও শিশুরা বিভিন্নভাবে নিরযাতনের শিকার হয় এবং স্বাভাবিক সময়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তা অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক গনমাধ্যমের সংবাদে দেখা গেছে বর্তমানে শিশু নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘লকডাউনে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে শিশু নির্যাতন’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে গত ৭ মে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে একটি বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে সারাদেশে ৪৬ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, অথচ ২০২০ সালের শুধু এপ্রিল মাসেই ২৭ জেলায় ৩৫ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
গত ১৩ জুলাই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এর একটি জরিপের ফলাফল থেকে জানা গেছে চলতি বছরের জুন মাসে এপ্রিল ও মে এর তুলনায় শিশু নির্যাতন বেড়েছে। আর আশংকাজনক হারে বেড়েছে বাল্যবিবাহ। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জরুরি ভিত্তিতে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বাল্যবিয়ে বন্ধ করা অপরিহার্য।
শিশু অধিকার রক্ষা ও তাদের দেখভালে মূলত মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে, কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব প্রতিবেদনের আলোকে প্রতীয়মান হয় যে তারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নোটিশ প্রেরণের বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, করোনা মহামারীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে। আবার লক্ষ্য করা গেছে এ সময় বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনা দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে অনেক অপরাধী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে এই বিশেষ পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য।
নোটিশ প্রেরণকারী আইনজীবী বলেন, এ জন্য করোনাকালে শিশু নির্যাতন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নোটিশ প্রেরণ করেছি। নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।