বাংলাদেশে আয়কর একটি প্রগ্রেসিভ কর ব্যবস্থা যার মাধ্যমে একদিকে যেমন রাষ্ট্রের রাজস্ব চাহিদা পূরণ হয়, অন্যদিকে সমাজের আয় ও সম্পদ বৈষম্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। করদাতাগণের করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর দাবী বহুদিনের এবং সরকারও তাতে সাড়া দেন, এর ফলে একজন করদাতার করের পরিমাণও হ্রাস পাবে। দেশের কর আইন সম্পর্কে ধারণা আরো স্পষ্ট, সহজ ও আধুনিক করার জন্য করসেবাকারী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ আইনজীবীগণ নিরলসভাবে করদাতাদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। কর আইনের বিধান সমূহ সহজভাবে করদাতার নিকট উপস্থাপন করা করসেবার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সে লক্ষে করদাতাগণের সুবিধার জন্য বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন অ্যাডভোকেট মাহফুজার রহমান ইলিয়াস।
আয়কর হচ্ছে ব্যক্তি বা স্বত্বার আয় বা লভ্যাংশের উপর প্রদেয় কর। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর আওতায় কর বলতে অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রদেয় আয়কর, অতিরিক্ত কর, বাড়তি লাভের কর, এতদসংক্রান্ত জরিমানা, সুদ বা আদায় যোগ্য অর্থকে বুঝায়। অন্য ভাবে বলা যায় যে, কর হচ্ছে রাষ্ট্রের সকল জনসাধারনের স্বার্থে রাষ্ট্রের ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারকে প্রদত্ত বাধ্যতামূলক অর্থ।
আয়কর রিটার্ন কি?
আয়কর কর্তৃপক্ষের নিকট একজন করদাতার বার্ষিক আয়ের তথ্যাবলী নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করার মাধ্যম হচ্ছে আয়কর রিটার্ন। আয়কর রিটার্ন ফরম এর কাঠামো আয়কর বিধি দ্বারা নির্দিষ্ট করা আছে। আয়কর আইন অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়।
কোন ব্যক্তি আয়কর প্রদানের জন্য উপযুক্ত?
অর্থ আইন, ২০২০ এর আওতায় প্রত্যেক ব্যক্তি করদাতা (অনিবাসী বাংলাদেশীসহ), হিন্দু যৌথ পরিবার, অংশীদারী ফার্ম, ব্যক্তি-সংঘ, ফান্ড, ট্রাস্ট ও আইনের দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তিসহ অন্যান্য করদাতার ক্ষেত্রে মোট আয়ের সীমা ৩,০০,০০০/- টাকার উপরে হলে আয়কর প্রদানের জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন। তবে-
- মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বৎসর বা তদূর্ধ্ব বয়সের ব্যক্তি করদাতার আয় ৩,৫০,০০০/- টাকা এর উপরে হলে তিনি আয়কর প্রদানের উপযুক্ত হবেন।
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতার আয় ৪,৫০,০০০/- টাকা এর উপরে হলে তিনি আয়কর প্রদানের উপযুক্ত হবেন।
- গেজেট ভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় ৪,৭৫,০০০/- টাকা এর উপরে হলে তিনি আয়কর প্রদানের উপযুক্ত হবেন।
- কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০,০০০/- টাকা বেশী হইবে; প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই কর দাতা হইলে যে কোন একজন এই সুবিধা ভোগ করিবেন।
ব্যক্তি করদাতার ন্যূনতম কর কি?
অর্থ আইন, ২০২০ মোতাবেক সম্মানিত করদাতার করমুক্ত সীমার ঊর্ধ্বে আয় আছে এমন করদাতার প্রদেয় আয়করের পরিমাণ বা বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত বিবেচনার পর প্রদেয় আয়করের পরিমান ন্যূনতম আয়করের চেয়ে কম, শূন্য বা ঋণাত্মক হলে, করদাতাকে এলাকা ভেদে যে পরিমান কর পরিশোধ করতে হয় তাকে ন্যূনতম কর বলে। তাবে প্রযোজ্য হারে ন্যূনতম করের পরিমাণ কোন ভাবেই নিম্নবর্ণিত হারের কম হবে না।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা ন্যূনতম করের হার ৫,০০০ টাকা। অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম করের হার ৪,০০০ টাকা। সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম করের হার ৩,০০০ টাকা।
ব্যক্তি করদাতার আয়করের জন্য আয়ের খাত
আয়কর অধ্যাদেশে, ১৯৮৪ অনুযায়ী সম্মানিত ব্যক্তি করদাতার আয়ের খাতসমূহ নিম্নরূপ
১। বেতনাদি
২। নিরাপত্তা জামানতের উপর সুদ
৩। গৃহ সম্পত্তির আয়
৪। কৃষি আয়
৫। ব্যবসা বা পেশার আয়
৬। মূলধনী মুনাফা
৭। স্বামী/স্ত্রী বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের আয়
৮। ফার্ম বা ব্যক্তি-সংঘের আয়ের অংশ
৯। অন্যান্য উৎস হতে আয়।
ব্যক্তি করদাতার রিটার্নে যে পরিমাণ কর প্রদান করতে হবে
অর্থ আইন, ২০২০ তে বর্ণিত তফসিল অনুযায়ী প্রত্যেক নিবাসী ব্যক্তি করদাতা (অনিবাসী বাংলাদেশীসহ), হিন্দু যৌথ পরিবার, অংশীদারী ফার্ম, ব্যক্তি-সংঘ, ফান্ড, ট্রাস্ট ও আইনের দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তিসহ অন্যান্য করদাতার ক্ষেত্রে মোট আয়ের উপর আয়করের পরিমাণ হবে নিম্নরূপ হারেঃ
সাধারণ করদাতার ক্ষেত্রে প্রথম ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর কর দিতে হবে না। মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বৎসর বা তদুর্ধ বয়সের ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে প্রথম ৩,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর কর দিতে হবে না। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে প্রথম ৪,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর কর দিতে হবে না। গেজেট ভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ক্ষেত্রে প্রথম ৪,৭৫,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর কর দিতে হবে না। তবে পরবর্তী ১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ৫% , পরবর্তী ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১০%, পরবর্তী ৪,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ১৫%, পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০% এবং অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর ২৫% কর দিতে হবে।
তবে শর্ত থাকে যে, কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০,০০০/- টাকা বেশী হইবে; প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই কর দাতা হলে যে কোন একজন এই সুবিধা ভোগ করবেন।
ব্যক্তি করদাতার কোন ধরনের বিনিয়োগ বা দানে কর রেয়াত পাওয়ার উপযুক্ত?
একজন করদাতা নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কিংবা দান করলে তিনি বিনিয়োগ ও দানকৃত অংকের বিনিয়োগ বা দান ভেদে আইনে নির্ধারিত পরিমাণ অংকের টাকা সরাসরি আয়কর রেয়াত পাবেন। একজন করদাতার বিনিয়োগ ও দানের উল্লেখযোগ্য খাতগুলোর তালিকা নিম্নরূপ
বিনিয়োগ খাত
- জীবন বীমার প্রিমিয়াম;
- সরকারি কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা;
- স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা;
- কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বীমা তহবিলে চাঁদা;
- সুপার এনুয়েশন ফান্ডে প্রদত্ত চাঁদা;
- যে কোন তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কীমে বার্ষিক সর্বোচ্চ ৬০,০০০/- টাকা বিনিয়োগ;
- সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে বিনিয়োগ;
- বাংলাদেশের ষ্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভ‚ক্ত কোম্পানীর শেয়ার, স্টক, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চাওে বিনিয়োগ;
- বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ট্রেজারী বন্ডে বিনিয়োগ এবং
- নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ক্রয়ে বিনিয়োগ।
দানের খাত
- যাকাত তহবিলে দান;
- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোন দাতব্য হাসপাতালে দান;
- প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দান;
- মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে প্রদত্ত দান;
- আগাঁ খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কে দান;
- আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতালে দান;
- আইসিডিডিআরবি (ICDDRB) তে প্রদত্ত দান;
- সিআরপি (CRP), সাভার এ প্রদত্ত দান;
- সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান;
- এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ এ দান;
- ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে দান;
- মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের কোন প্রতিষ্ঠানে অনুদান এবং
- জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান।
ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়ের খাত
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর আওতায় ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়ের কয়েকটি খাত নীচে দেওয়া হলোঃ-
- সরকারী চাকুরিজীবী করদাতা যদি চাকুরীর দায়িত্ব পালনের জন্য কোন বিশেষ ভাতা, সুবিধা বা আনুতোষিক পান;
- পেনশন;
- অংশীদারী ফার্ম হতে পাওয়া মূলধনী মুনাফার অংশ;
- ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গ্র্যাচুইটি প্রাপ্তি;
- প্রভিডেন্ট ফান্ড এ্যাক্ট, ১৯২৫ অনুযায়ী উক্ত ফান্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থ;
- স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থ;
- স্বীকৃত সুপার এ্যানুয়েশন ফান্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থ;
- বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর আওতায় কোন শ্রমিক কর্তৃক ওয়ার্কাস পার্টিসিপেশণ ফান্ড থেকে প্রাপ্ত অর্থ;
- মিউচ্যুয়াল ফান্ড অথবা ইউনিট ফান্ড থেকে প্রাপ্ত ২৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয় (সুদ, মুনাফা বা ডিভিডেন্ড);
- স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানী থেকে প্রাপ্ত নগদ লভ্যাংশ খাতের আয় ২৫,০০০/- টাকা পর্যন্ত;
- সরকারি নিরাপত্তা জামানতের সুদ যা সরকার করমুক্ত বলে ঘোষণা করেছে;
- রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার পাহাড়ী আদিবাসীর দ্বার এই জেলাগুলোতে পরিচালিত আর্থিক কর্মকান্ডের ফলে প্রাপ্ত আয়;
- রপ্তানী ব্যবসা হতে প্রাপ্ত আয়ের ৫০%;
- আয়ের একমাত্র উৎস ‘কৃষি খাত’ হলে কৃষি খাত হতে আয় ২,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত;
- সফ্টওয়ার ডেভেলপমেন্ড বা ন্যাশনওয়াইড টেলিকমোনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (NTTN) বা ইনফরমেশন ট্যেকনোলজি ইনএ্যাবেল্ড সার্ভিস (ITES) ব্যবসার আয়;
- হাঁস-মুরগীর খামার হতে অর্জিত আয়। তবে এ ক্ষেত্রে অর্জিত আয় ১,৫০,০০০/- টাকা এর অধিক হলে অর্জিত আয়ের ১০% সরকারী বন্ড ক্রয়ে বিনিয়োগ করতে হবে। এ বিধান কর বছর ২০১৫-১৬ এর জন্য প্রযোজ্য। ২০১৬-১৭ কর বছর হতে এ খাতের আয়ের করযোগ্যতার বিষয়ে ১৬/০৮/১৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখ একটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়েছে;
- হাঁস-মুরগী, চিংড়ী ও মাছের হ্যাচারী এবং মৎস চাষ হতে অর্জিত আয় এর ক্ষেত্রে প্রথম ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ‘শূন্য’ হারে, পরবর্তী ১০ লক্ষ টাকা আয়ের উপর ৫% হারে এবং অবশিষ্ট আয়ের উপর ১০% হারে কর প্রদেয় হবে;
- কতিপয় ক্ষেত্র ব্যতীত ব্যক্তি-করদাতা কর্তৃক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানীর শেয়ার বিক্রয় হতে অর্জিত মূলধনী মুনাফা;
- হস্তশিল্পজাত দ্রব্যাদি রপ্তানী থেকে উদ্ভুত আয়;
- জিরো কুপন বন্ড থেকে উদ্ভুত আয়;
- ওয়েজ আনার্স ডেভেলপমেন্ড বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইইএস ডলার ইসভেস্টমেন্ট বন্ড, পাউন্ড স্টার্লিং প্রিমিয়াম বন্ড, পাউন্ড স্টার্লিং ইসভেস্টমেন্ট বন্ড, ইউরো প্রিমিয়াম বন্ড ও ইউরো ইসভেস্টমেন্ট বন্ড হতে প্রাপ্ত সুদ আয়;
- পেনশনার সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত সুদ, যেখানে বছরে সর্বমোট বিনিয়োাগের পরিমাণ ৫,০০,০০০/- টাকা অধিক নয়।
করমুক্ত আয়সমূহ করদাতার মোট আয়ের অন্তর্ভূক্ত হবে না। এটি রিটার্নেও ১৮ নং ক্রমিকে করমুক্ত আয়ের কলামে প্রদর্শন করতে হবে।
কখন আয়কর রিটার্ন জমা প্রদান করতে হবে?
ব্যক্তি করদাতাকে কর দিবস এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। ২০২০-২১ কর বছরের জন্য ৩০ নভেম্বর হচ্ছে কর দিবস, অর্থাৎ রিটার্ন দাখিলের সর্বশেষ তারিখ। একজন ব্যক্তি করদাতা ১লা জুলাই ২০১৯ থেকে ৩০ নভেম্বর ২০২০ তারিখের মধ্যে ২০২০-২১ কর বছরের রিটার্ন দাখিল করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করা সম্ভব না হলে করদাতা রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য বিধি নির্ধারিত ফরমে উপযুক্ত কারণ উল্লেখপূর্বক উপ-কর কমিশনারের কাছে সময়ের আবেদন করতে পারেন। সময় মঞ্জুর হলে বর্ধিত সময়ের মধ্যে সাধারণ অথবা সার্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতির আওতায় রিটার্ন দাখিল করা যাবে।
আয়কর রিটার্ন জমা প্রদান না করলে কি হবে?
কোন করদাতা আয়কর অধ্যাদেশের ৭৫ ধারা অনুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে তার উপর আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারা অনুযায়ী জরিমানা, ৭৩ ধারা অনুযায়ী ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত সরল সুদ এবং ৭৩(এ) ধারা অনুযায়ী বিলম্ব সুদ আরোপযোগ্য হবে। যে ক্ষেত্রে করদাতা রিটার্ন দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করে উপ-কর কমিশনার কর্তৃক মঞ্জুরকৃত বর্ধিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করবেন, সে ক্ষেত্রে করদাতার উপর জরিমানা আরোপিত হবে না, তবে অতিরিক্ত সরল সুদ ও করদাতার উপর মাসিক ২% হারে বিলম্ব সুদ আরোপিত হবে।
মাহফুজার রহমান ইলিয়াস: আইনজীবী ও কর্ণধার মাহফুজ লিগ্যাল সল্যুশনস। ই-মেইল: iliyashmr@gmail.com