অধস্তন আদালতে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তিতে দ্বিতীয়বার লিখিত পরীক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নেয়া সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক-উল-হাকিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ সোমবার (১০ আগস্ট) এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
বার কাউন্সিলের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে তিন হাজার ৫৯০ জন শিক্ষানবিশ আইনজীবী গত ২৮ জুলাই হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে নোটিশ দিয়ে ২০১৭ সালের এমসিকিউ পরীক্ষায় পাস করা ওই তিন হাজার ৫৯০ জন পরীক্ষার্থী সরাসরি আগামীতে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন বলে জানানো হয়। কিন্তু ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়ার পর বার কাউন্সিলের পক্ষ থেকে পুনরায় নোটিশ দিয়ে বলা হয়, উল্লেখিত তিন হাজার ৫৯০ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না।
বার কাউন্সিলের এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটটি আজ হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক-উল-হাকিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চে কার্যতালিকায় ২৭ নম্বরে ছিল।
শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এক সপ্তাহের জন্য সময় আবেদন করেন। আবেদনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইন সংশোধনের উদ্দেশ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেছে। তারা চেষ্টা করছে, আলোচনার মাধ্যমে তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এ সময় আমরা আদালতকে বলি, তারা অভ্যন্তরীণভাবে কী যোগাযোগ করছেন বা কত সময় লাগবে এ সম্পর্কে আমরা কীভাবে জানবো? তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, যদি তারা এই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করতে না পারেন, তখন আদালত যে আদেশ দেবেন তা-ই তারা মেনে নেবেন।
পরে আদালত মৌখিকভাবে বলেন, আমরা এক সপ্তাহের জন্য মুলতবি রাখছি। যদি এর মধ্যে তারা কোনো সমাধানে না পৌঁছাতে পারে তাহলে আগামী সপ্তাহে আমরা আদেশ প্রদান করব।
উল্লেখ্য গত ২৬ জুলাই বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষা ২৬ সেপ্টেম্বর ধার্য করে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।
নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অ্যাডভোকেটশিপ তালিকাভুক্তির এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হইবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ২২ জুলাই এক পত্রে জানিয়েছে- আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ খোলা সাপেক্ষে কলা অনুষদে পরীক্ষা গ্রহণে সম্মত রয়েছে। সেইমতে পরীক্ষা-হল প্রাপ্তি সাপেক্ষে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এনরোলমেন্ট লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত পরীক্ষার পরীক্ষার্থীরা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বার কাউন্সিল এনরোলমেন্ট নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) পরীক্ষার জন্য ইস্যুকৃত প্রবেশপত্র দিয়ে আসন্ন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। রোল নম্বর অনুযায়ী পরীক্ষা-কেন্দ্রের নামসহ বিস্তারিত শিডিউল এবং অন্যান্য নির্দেশনা পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে। যা বার কাউন্সিলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, এনরোলমেন্ট এমসিকিউ পরীক্ষায় একবার উত্তীর্ণ হলে পরপর দুইবার লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করে জারিকৃত গেজেটে (২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রুলস সংশোধন করে ‘ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে’ মর্মে উল্লেখ রয়েছে। এই সংশোধনীটি করা হয় ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর। ফলে উক্ত তারিখের পূর্বে যারা একবার লিখিত পরীক্ষা দিয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন তারা দ্বিতীয়বার লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন না। তবে যদি সরকার উক্ত সংশোধনীটির প্রয়োগ ভূতাপেক্ষাভাবে প্রয়োগ করার উল্লেখ করে কোনো সংশোধনী প্রদান করে, কেবল সেইক্ষেত্রে ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বরের পূর্বে যারা একবার লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন তারাও দ্বিতীয়বার লিখিত পরীক্ষা দিতে পারবেন।