সাবেক এক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে তলব করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ওই মামলায় যুবরাজ ছাড়াও দেশটির ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত শুক্রবার সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে ওই নোটিশ জারি করা হয় বলে খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। কলম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট আদালতের ওই নোটিশে বলা হয়েছে সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারের কাজ শুরু হবে।
কানাডায় বসবাসরত সৌদি আরবের সাবেক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল-জাবরি গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন তাকে হত্যা করতে কানাডায় হিট স্কোয়াড পাঠিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ। তার দাবি ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে তুরস্কের ইস্তান্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওই ব্যর্থ হত্যা প্রচেষ্টা চালানো হয়। মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং যুবরাজের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে নিবিড় জানাশোনা থাকায় তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে ওই মামলায় দাবি করা হয়।
ওই মামলা দায়েরের একদিন পরেই কলম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট আদালত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানসহ ১২ অভিযুক্তকে তলব করে নোটিশ ইস্যু করে। এতে বলা হয়, ‘আপনারা সাড়া দিতে ব্যর্থ হলে অভিযোগকারী স্বস্তির দাবি অনুযায়ী আপনাদের বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচার শুরু হয়ে যাবে।’ তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এই তলবের কারণে হয়তো সৌদি যুবরাজকে শেষ পর্যন্ত মার্কিন আদালতে হাজির হতে হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সহকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রুস ফেইন বলেন, ‘এমবিএস (মোহাম্মদ বিন সালমান) এখন মরিয়া হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এর সঙ্গে লবিং করবেন, যাতে তারা দায়মুক্তির পরামর্শ দিয়ে একটি চিঠি ইস্যু করেন।’
তিনি বলেন, এটি আইনের খারাপ ক্ষেত্র হলেও ওই চিঠিতে আদালতকে মামলাটি খারিজ করে দিতে বলা হতে পারে। কারণ এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং অন্য রাষ্ট্র প্রধান কিংবা সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করে ফেলতে পারে।’
মার্কিন সরকারের সাবেক ওই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘তবে সেক্ষেত্রে নভেম্বর (মার্কিন নির্বাচন) সৌদি আরবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আমি নিশ্চিত করে আপনাদের বলতে পারি, এই মুহূর্তে সৌদি আরব এবং যুবরাজ পম্পেও এবং ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে তাকে এগুলো থেকে বের করে নিতে বলছেন।’