একজন আসামি গ্রেফতার বা আটক হওয়ার পর তার পছন্দ মতো আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারবেন। আর এটা তার সাংবিধানিক অধিকার বলে জানিয়েছেন আইনজ্ঞরা।
অনলাইন সংবাদ মাধ্যম আমাদের সময় ডটকমের ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান ‘আমাদের বাংলাদেশ’ এ সঞ্চালক ছিলেন অ্যাডভোকেট তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, জঘন্যতম আসামিরও অধিকার রয়েছে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের। সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ের প্রতিফলন দেখা যায়। আইনজীবীর দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, যখন কোন পক্ষ আইনজীবী নিয়োগ করেন তখন যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া তিনি তা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন না। এটা বার কাউন্সিলের আইন।
সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, আইনজীবীকে বলা হয় অফিসার অফ দ্যা কোর্ট। আদালত ও মক্কেলের প্রতি তার দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে। প্রাথমিক দায়িত্ব আদালতের প্রতি। এমন কোন কথা বলবেন না, যা আদালতের প্রতি দায়িত্বের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মামলা গ্রহণ করার পর তিনি মক্কেলের স্বার্থের সঙ্গে কোন আপোস করবেন না, তার অনুপস্থিতিতে অপর পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না। আর আইনজীবীরা নিয়ম-কানুন মানছেন কি না, তা দেখার দায়িত্ব বার কাউন্সিলের।
আসামির অধিকার সম্পর্কে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও ব্লাস্টের উপদেষ্টা নিজামুল হক নাসিম বলেন, যত খারাপ মামলাই হোক না কেন, প্রত্যেক আসামির তার পছন্দ মতো আইনজীবী নিয়োগের অধিকার রয়েছে। এটা সংবিধান স্বীকৃত, মৌলিক অধিকার।
কেউ বিতর্কিত হলে পছন্দ মতো আইনজীবী পাবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজি রিয়াজুল হক বলেন, প্রতিটি মানুষ সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। মানবাধিকার সার্বজনীন। এ অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবেনা। সংবিধানের ৩১ ও ৩৩ অনুচ্ছেদ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলা আছে।
তিনি বলেন, কাউকে বঞ্চিত করার অধিকার আমাদের নেই। এমনটি হলে সেটা হবে সংবিধানের বরখেলাপ। কোন মানুষের বিরুদ্ধে যত জঘন্য অভিযোগই আসুক না কেন, আদালত থেকে দোষী সাব্যস্ত না হলে তাকে দোষী বলা যাবে না। এমনকি দেখলেও বলা যাবেনা।