রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বস্তরে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি দলগুলোর নিবন্ধন আইনের খসড়ায় না রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী।
আন্তর্জাতিক সিডও দিবস উপলক্ষে শনিবার বিকালে ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে নারী মুক্তি সংসদের এক আলোচনা সভায় সালমা আলী বলেছেন, নারী নেতৃত্বের সাথে আলোচনা করে এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বস্তরে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণের বাধ্যবাধকতা আছে। ২০০৮ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের সংশোধনীতে এই শর্ত পূরণের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বছরের মাঝামাঝি এসে কোনো রাজনৈতিক দল শর্ত পূরণের ধারেকাছে আসতে না পারায় নির্বাচন কমিশন ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন-২০২০’ শিরোনামে যে খসড়া তৈরি করেছে, তাতে কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতার পরিবর্তে অন্য একটি ধারা যুক্ত করেছে।
প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সকল পর্যায়ের কমিটি ন্যূনপক্ষে ৩৩ ভাগ পদ মহিলা সদস্যদের জন্য সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য থাকিবে।’
সালমা আলী নির্বাচন কমিশনের এ ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরনের নির্বাচন কমিশন চাই না, যে কমিশনে নারীদের কোনো অ্যাকসেস নাই, আমাদের সাথে কোনো কথাবার্তা নাই।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল নারী নেতৃত্বের সাথে এ নিয়ে কথা বলা। কমিশনের উচিত ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কৈফিয়ত চাওয়া। তা না করে আরও শিথিল করে দিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের মানে হচ্ছে পশ্চাদপসরণ।”
আলোচনা সভায় বক্তারা সিডও সনদের বাস্তবায়ন চেয়ে বলেন, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রে নারীর প্রতি সকল ধরনের বৈষম্য, নিপীড়িন বন্ধ করতে হবে। কোনোভাবেই দলে ও নির্বাচনে ৩৩ ভাগ নারী নেতৃত্বের বিধান তুলে দেওয়া চলবে না।
তারা বলেন, করোনাভাইরাস মহামরীতে নারীর প্রতি সহিংসতা বিশেষ করে পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী অধিকার সুরক্ষায় কেবল আইন থাকলেই হবে না, আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।
সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সেজন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয় সভা থেকে।