বিদেশে মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকদের মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে সরকারি খরচে বিদেশে দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
জনস্বার্থে আজ রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ডাক ও রেজিস্টারযোগে নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান লিংকন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নোটিশটি পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, ‘তৃতীয় বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে আমরা এখন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি এবং যে শক্তির ওপর ভর করে আমরা দাঁড়াচ্ছি সেটা হলো মূলত বৈদেশিক রেমিট্যান্স।’
নোটিশে বলা হয়, ‘দেশের মানুষ যারা বিদেশের মাটিতে শ্রম দিচ্ছেন, তাদের ঘাম ঝরানো পয়সা দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সচল করছে এবং তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হচ্ছে সেই সমৃদ্ধ অর্থনীতির সুবিধা আমাদের দেশের আপামর জনসাধারণ ভোগ করছে এবং আমরা আমাদের আয়েশি জীবন যাপন করতে পারছি।’
নোটিশে আরও বলেন, ‘যে খেটে খাওয়া মানুষগুলো তাদের পরিবার পরিজন ছেড়ে বিদেশে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করার জন্য দিনরাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সেই শ্রমিকদের প্রতি একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের দায়-দায়িত্বের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সরকার এই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে।’
নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মনিরুজ্জামান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, ‘সাধারণত বিদেশে কর্মরত অবস্থায় কোনো শ্রমিক মারা গেলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত শ্রমিকের মরদেহ সংশ্লিষ্ট দেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে ফ্রি ভিসা বা অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রে শ্রমিক মারা গেলে সে যে দেশের নাগরিক সেই দেশকেই তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়।’
তিনি বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমাদের দেশে এ ধরনের শ্রমিকদের যারা বিদেশে মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের লাশ বিমান বাংলাদেশ বিনা খরচে দেশে আনার ব্যবস্থা করে আসছিল।’
নোটিশ প্রেরণকারী আইনজীবী জানান, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি, বিমান কর্তৃপক্ষ নিজ খরচে আর মরদেহ বহন করবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেক্ষেত্রে বিদেশে কোনো শ্রমিক মারা গেলে তার পরিবারের খরচে মরদেহ দেশে আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা অর্থনীতিকে সচল রাখছে, তারা কোনো দুর্ঘটনায় মারা গেলে তার মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করবে না, একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
তাই এই নোটিশ পাঠিয়ে বলা হয়েছে, ‘সাত কর্ম দিবসের মধ্যে সরকারি খরচে বিদেশে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া শ্রমিকদের মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করবেন অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’