নারায়ণগঞ্জের তল্লায় বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে প্রদান করতে বলা হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত।
আজ রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। তিতাসের গ্যাস কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের তল্লায় বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ৭ দিনের মধ্যে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে এই টাকা নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ওই টাকা বিতরণ করবেন বলেও আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। এছাড়াও প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে কেন ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেছিলেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও ব্যারিস্টার মার ই-য়াম খন্দকার।
গত ৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের পশ্চিমতল্লা এলাকার বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে এ রিট দায়ের করা হয়। এছাড়াও ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটে নির্দেশনা চাওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মার ই-য়াম খন্দকার জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
রিটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের তল্লায় বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি আছেন দগ্ধ ৮ জন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে এশার নামাজ চলাকালে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হন।
তাদের মধ্যে এক শিশু এবং ওই মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষসহ অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন।