কারাগার থেকে আসামির পলায়নের পরই কারাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একইসঙ্গে লালমনিরহাট কারাগারের উড়ো চিঠি যাচাইয়ের জন্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের কারাগারগুলোতে হঠাৎ করে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা বা কারারক্ষী বাড়ানো হয়েছে এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কারাগারগুলো সুরক্ষিত করার জন্য এটা করা হয়েছে। আপনারা জানেন কারাগার থেকে আমাদের একজন আসামি কারারক্ষীদের দুর্বলতার কারণে কারাগার থেকে পালিয়েছে। সেজন্যই আমরা কারাগারকে আরও শক্তিশালী করছি। যাতে করে আর এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। আমরা সেখানে পাহারা বাড়িয়েছি সেটা নয়, কারাক্ষীদের দায়িত্ব যেন সঠিকভাবে পালন হয়, আমরা সে ব্যবস্থা নিয়েছি। এছাড়া আমরা জঙ্গিবাদ মূল উৎপাটন করতে পারিনি। তবে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।
লালমনিরহাটের কারাগারের উড়ো ফোন ও চিঠির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের উড়ো চিঠি ও কাগজ আমাদের কাছে সবসময়ই আসে ও বিভিন্ন জায়গায় যেয়ে থাকে। এ বিষয়ে আমরা কখনো মনোযোগ দিই না। তবে আমরা তথ্যভিত্তিক সবসময় কাজ করে থাকি। আমাদের কাছে যখন গোয়েন্দা তথ্য আসে তখনই আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। উড়ো চিঠি যেগুলো আসছে সেগুলো গোয়েন্দাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি তারা যদি মনে করেন এগুলোর কোন তথ্য আছে তাহলে আমরাও ব্যবস্থা নেবো।
মিয়ানমার সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে সেখানে আমাদের কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি সীমান্তে মাঝেমধ্যেই সৈন্য সামন্ত বাড়ান বা অবস্থান করেন। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়েছে। তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সীমান্তে সেনা মোতায়নের কারণের ব্যাখ্যা চেয়েছেন আমাদের সচিব পর্যায়ে বৈঠকে। এছাড়া আমরা আমাদের পক্ষ থেকে যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকি। এটা নতুন কিছু নয়।
আমাদের সীমান্তে সেনা বাড়ানোর কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। আর আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকি। আমাদের রোহিঙ্গাসহ নানা সমস্যা রয়েছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করে যাচ্ছি। আমাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হলো কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। প্রধানমন্ত্রীসহ বঙ্গবন্ধু নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা চলছি।
বিজিবি ও বিএসএফের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে কোনো পরিবর্তন আসতেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিজিবি ও বিএসএফ আলোচনা প্রতিবছরই হয়। সেখানে আমাদের বিজিবির ডিজি যান ও তারাও আসেন। এই প্রক্রিয়া চলমান। আমরাও ভারতে যেয়ে থাকি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও আসেন। আমাদের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক আছে। তারিখ তো পরিবর্তন হতেই পারে যেকোনো কারণে। আগরতলা-আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসবেন। তবে কয়দিন অবস্থান করবেন সেটা বিজিবির ডিজি জানেন।
সীমান্ত হত্যার বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমার কাছে এজেন্ডাগুলো নেই। তবে এসব বিষয়গুলো আলোচনা হবে। তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব সুলভ সম্পর্ক রয়েছে। তাই তাদের সঙ্গে আমাদের যেসব বিষয়ে সমস্যা রয়েছে সব নিয়ে আলোচনা হবে।
আরও পড়ুন: জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি, কারাগারে বাড়তি সতর্কতা