নাইজেরিয়ার কাদুনা অঙ্গরাজ্যে ১৪ বছরের কম বয়সের শিশু ধর্ষণের অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে ওই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড এবং তা কার্যকরের আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাকে নপুংসক করার নতুন একটি আইন চালু হয়েছে। ধর্ষক যদি নারী হন সেক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে ‘ফ্যালোপিয়ান টিউব’ কেটে দেওয়া হবে বলে জানায় দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। গত বুধবার কাদুনার গভর্নর নতুন ওই আইনে স্বাক্ষর করেন।
কাদুনার গভর্নর নাসির এল-রুফাই বলেন, ‘গুরুতর একটি অপরাধ থেকে আগামীতে শিশুদের সুরক্ষায় নতুন এ আইনের প্রয়োজন ছিল।’ তবে কেন শিশু ধর্ষণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নপুংসক করতে হবে তার কোনো কারণ এখনো ব্যাখ্যা করা হয়নি।
নাইজেরিয়া জুড়ে ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় কঠোর শাস্তির এই আইনকে দেশটির অনেক নাগরিক স্বাগত জানিয়েছেন। যদিও সমালোচকেরা বলছেন, জনগণ স্বাগত জানালেও এ আইন নাইজেরিয়ার সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এছাড়া এই আইনের ফলে ধর্ষণের অভিযাগে মামলার সংখ্যাও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন ওই আইনে ১৪ বছরের বেশি বয়সের কাউকে ধর্ষণের অপরাধে কেউ দোষীসাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং নপুংসক করার বিধান রাখা হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র কাদুনা অঙ্গরাজ্যেই ধর্ষণের অপরাধে এতটা কঠিন শাস্তির আইন চালু হলো। যদিও আরও কয়েকটি অঞ্চলে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে নপুংসক করার ব্যবস্থা চালু আছে।
চেক প্রজাতন্ত্রে ধর্ষণের নৃশংস ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে অপরাধী স্বেচ্ছায় নিজেকে নপুংসক করার অস্ত্রোপচার করাতে পারেন। আমেরিকার অনেক অঙ্গরাজ্যে ওষুধের মাধ্যমে নপুংসক করার বিধান রয়েছে, তবে এক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে নপুংসক করা হয় না। ইন্দোনেশিয়ায় ২০১৬ সালে ওষুধের মাধ্যমে নপুংসক করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
এ সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও ধর্ষক এবং শিশু যৌন নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে একই শাস্তির বিধান চালু করার পক্ষে মত দিয়েছেন। যদিও ইমরান মনে করেন, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু ‘মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে’ বলে আশঙ্কা তার।
নাইজেরিয়ায় প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। গত ডিসেম্বরে দেশটির নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। গত জুনের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ওই সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে গেছে। কারণ হিসেবে, মহামারি ঠেকাতে লকডাউনে ঘরবন্দী নারী ও শিশুরা অধিক হারে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে বলে জানানো হয়।
সূত্র- আমাদের সময়