২০০৫ সালে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) গঠিত হওয়ার পর মোটামুটি সঠিকভাবেই শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও সনদ প্রদানের কাজ করে আসছিল। আর সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা) কমিটির মাধ্যমে নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করতেন।
কিন্তু ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর এক পরিপত্রের মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষমতা এনটিআরসিএর হাতে চলে যায়। তৎকালীন শিক্ষা সচিব এন আই খান (নজরুল ইসলাম খান) স্বাক্ষরিত নতুন জারিকৃত পরিপত্রে বলা হয়, প্রতি বছর একটি নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় মেধার ভিত্তিতে উত্তীর্ণদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এনটিআরসিএ এবং সনদের মেয়াদ হবে ৩ বছর ।
এরই প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে ১৩ তম বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়, যা তিন ধাপে তথা প্রিলি, রিটেন, ভাইভা পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তিন ধাপে উত্তীর্ণ হয়ে ১৩ তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি। পরে তারা এনটিআরসিএ (NTRCA) সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদানসহ মানবন্ধন করেন। তাতেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়োগ না দিলে নিবন্ধনধারীদের মধ্যে কিছু সংখ্যক সংক্ষুব্ধ হয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করেন।
দীর্ঘ শুনানির পরে গত ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদের দ্বৈত বেঞ্চ ১৩তম বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের গেজেট ও পরিপত্র অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন।
পরবর্তীতে এনটিআরসিএ এর তৎকালীন চেয়ারম্যান আশফাক হোসেন এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপীল বিভাগের চেম্বার কোর্টে স্টে অর্ডার চান। চেম্বার কোর্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট আদেশ স্থগিত করা হয়। এরপর এ বিষয়ে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তি দেন। পরে, ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণরা যৌক্তিক শুনানীর পর চেম্বারকোর্ট থেকে স্টে অর্ডার বাতিল করার পর এনটিআরসিএ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রীমকোর্টে আপিল করেন। কয়েক দফায় শুনানি শেষে গত ১২ মার্চ ২০২০ তারিখ আপিল বিভাগ ১৩ তমদের হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে। চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালতের এ রায় প্রকাশিত হয়।
১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ না পাওয়া রিটকারীদের একজন শাহ এমরান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, তিন ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিবন্ধন পেয়েও দীর্ঘ সময় নিয়োগ না হওয়ায় অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন। আমরা আপিল বিভাগের রায় দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।