অ্যাটর্নি জেনারেল হল বাংলাদেশ সরকারের প্রধান ও মুখ্য আইন পরামর্শক এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে সরকার পক্ষের আইনজীবী। অ্যাটর্নি জেনারেল সাধারণত সম্মানিত জ্যেষ্ঠ আইনানুজ্ঞদের মধ্য থেকে শাসিত সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত হন। মাহবুবে আলম ছিলেন বাংলাদেশের ১৩তম অ্যাটর্নি জেনারেল বা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা। দেশের ইতিহাসে দীর্ঘমেয়াদে দায়িত্বপালন করা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কর্মময় বর্ণাঢ্য জীবনের সারসংক্ষেপ নিম্নরূপ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার, সংবিধানের ৫ম, ৭ম, ত্রয়োদশ ও ষোড়শ সংশোধনী মামলায় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে ইতিহাসের অংশ হয়েছেন তিনি। রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) সেই প্রথিতযশা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুবে আলম পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন।
জন্ম ও শিক্ষা
১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ সালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মৌছামন্দ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) এবং পরের বছর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে এমএ পাস করেন। এরপর ১৯৭২ সালে তিনি এল.এল.বি সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংবিধান এবং সংসদীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইসিপিএস) থেকে সাংবিধানিক আইন এবং সংসদীয় প্রতিষ্ঠান এবং পদ্ধতিতে দুটি ডিপ্লোমা ডিগ্রী অর্জন করেন।
কর্মজীবন
মাহবুবে আলম আইন বিষয়ে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে অনুশীলন শুরু করেন এবং ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হন। ১৯৯৯ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন এবং ২০০৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৫-২০০৬ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন এর আগে ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
মাহবুবে আলমের স্ত্রী বিনতা মাহবুব একজন চিত্রশিল্পী। তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে আছে। ছেলে সুমন মাহবুব একজন সাংবাদিক। আর মেয়ে শিশির কণা একজন আইনজীবী।
মৃত্যু
মাহবুবে আলম ২০২০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সকালে করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসিইউতে নেয়া হয়। তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন।