পূর্ব বিরোধের জেরে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারামারি ও চুরির অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় চিকিৎসকের দণ্ড, বাদীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ করেছে কক্সবাজারের একটি আদালত। একইসঙ্গে মামলার অভিযুক্তকে খালাস প্রদান করা হয়। চকোরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাজীব কুমার দেব গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত মামলার বাদীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৫০ ধারায় কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে শোকজ (কারণ দর্শানো নোটিশ) করা হয়। পাশাপাশি দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৯৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং মিস মামলা মূলে ১৯৩ ধারায় অপরাধ আমলে গ্রহণ করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছেন আদালত।
মামলার চিকিৎসক সাক্ষী কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সাবেক আর এম ও ডাঃ সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিবিধ মামলা মূলে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ৪৮৫এ ধারা মোতাবেক ২০০ টাকা জড়িমানার দন্ড অনাদায়ে ০৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চিকিৎসা সনদ (মেডিক্যাল সার্টিফিকেট) সরবরাহের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনায় অবহেলা ও গাফিলতির কারণে কক্সবাজারের পেকুয়া থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাদিরের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সে মর্মে কারণ দর্শানো হয়।
এছাড়াও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, কক্সবাজার স্মারক নং জে প্রা শি অ/কক্স/২০১০/২৫৭৯(৭) ইস্যুকৃত অফিস আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিককে বকেয়া বেতন সহ চাকুরী ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট বরাবরে সুপারিশ করা হয়।
১৩ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণ অংশে বলেন – Also today men say “I will see you in court”. This is not a “simple worded sentence” but bears a “common man emotion” based on an honest belief that from the very inception of the human civilization, the judiciary has been thought to be the last stair of all resorts where this thought has gained the constitutional mandate through many historic struggles. This is also believed that the judiciary, the important pillar of the state three organs, has been shaped with all legal arms construing to providing all legal remedies as the last stair. Hence this court shall not let an intruder come with a selfish relief and keep his arms over the shoulder of the last stair. In the instant case, the informant has been seated on the shoulder of the last stair only to make an innocent to be victim of his revenge. It can never be accepted both in the eye of law and human justice that mere mentioning of an allegation in the ejahar as to stealing tk 6000, can be a weapon to take away 10 years professional career of a young blood who has come with a dream to render service in the service of the Republic and to contribute to the making of an educated society. Such a false and vexatious allegation happened to an irony of fact that a public servant, a member of a noble profession, even to meet his mouth, worked as a rickshaw puller and made the intruder laugh at taking a safe driving seat on the shoulder of the last stair. Here this court shall not remain silent only by making an order of acquittal rather shall take legal actions against the concerned who have been proved to be involved in the loss of ten professional years from an innocent victim, a member of the nation building profession. Hence this court decides to proceed on under section 250 of the Criminal Procedure Code, 1898 against the informant. This court also decides to file complaint under section 193 of the Penal Code, 1860. This court further decides to take legal actions against the MO, Mohammad Saiful Islam and the IO, Md Abdul Kadir.
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী মোহাম্মদ মোদাচ্ছের মুরাদ কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শেখের কিল্লা ঘোনার বাসিন্দা। ২০১০ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় এজাহার দায়ের করলে মারামারি ও চুরির মামলায় ৩২৬ ধারা সহ অন্যান্য ধারায় এফ আই আর রেকর্ড হয়। তৎপরবর্তীকালে তা জি আর ০৪/১০ হিসেবে এন্ট্রিভূক্ত হয়। এই মামলা বিচারাধীন থাকায় একই বছরের ১১ অক্টোবর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, কক্সবাজার স্মারক নং জে প্রা শি অ/কক্স/২০১০/২৫৭৯(৭) মূলে অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিককে সরকারি চাকুরী হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এবং এখনো তা বহাল আছে।
পরবর্তীতে আবু বকর সিদ্দিক সহ চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩২৩, ৩২৪, ৪৪৭ ধারায় অভিযোগ গঠিত হয় এবং বাকি ৯ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১০ বছর বিচারকাজ চলার পর আদালতে প্রমাণিত হয় পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে বাদী এ মামলা দায়ের করে। এছাড়া চিকিৎসক কর্তৃক ইস্যুকৃত ও সংবাদদাতা কর্তৃক দাখিলীয় চিকিৎসা সনদ (এমসি) মিথ্যা সাক্ষ্য হিসেবে প্রমাণিত হয়। একইসঙ্গে তদন্ত পরিচালনায় তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফিলতি ও অবহেলা প্রমাণিত হয়। বিবাদীকে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চাকুরী হতে সাময়িক বরখাস্তের কারণে তার আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির বিষয়টি প্রমাণিত হয় এবং তিনি মামলা চলাকালে আর্থিক অনটনে পড়ে রিক্সাও চালিয়েছিলেন।