হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইম স্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেয়ার নির্দেশ বহাল রাখায় অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সেলিনা আকতার বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) শিক্ষকদের পক্ষে নোটিশটি পাঠান।
নোটিশে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, উপ-সচিব রওনক আফরোজা সুমা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন এবং হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়।
আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাস্তবায়ন চাওয়া হয়েছে। অন্যথায় আদেশ বাস্তবায়ন না করা হলে বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৩৭ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি ১৯৭৩ সালে জাতীয়করণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি শিক্ষক মহাসমাবেশে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ লাখ ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করা এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির শর্ত ঠিক করে একটি বিধিমালা জারি করে। এই বিধিমালার আলোকে শিক্ষকরা টাইম স্কেল পেয়ে আসছেন। কিন্তু চলতি বছরের ১২ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয় ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের ওই টাইম স্কেল বাতিল করে একটি আদেশ জারি করে। একই সঙ্গে ক্ষেত্রে টাইম স্কেল বাবদ নেয়া অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করা হয়। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহীর গাঙ্গোপাড়া বাগমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক এ রিট আবেদন করেন।
ওই দিন হাইকোর্ট ৬ মাসের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করে দেন। এরপর হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি গত ৮ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়। তবে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের ক্ষেত্রে টাইম স্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেয়ার জন্য হিসাব মহানিয়ন্ত্রককে নির্দেশ দেয়। এ অবস্থায় আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।