বাসায় গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতার জন্য ৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে এ নির্দেশনা দেন।
আজ রোববার (৪ অক্টোবর) ঘোষিত রায়ে নিহতের বাসার দুই গৃহকর্মী রিতা আক্তার ওরফে স্বপ্না ও রুমা ওরফে রেশমাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।
রায়ে হত্যার পর ঘরের মালামাল চুরির অভিযোগে তাদের প্রত্যেককে সাত বছর কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন।
গৃহকর্মীর হাতে বাসার গৃহকর্ত্রী হত্যার ঘটনাকে জঘন্য, নির্মম বলে অভিহিত করেন আদালত। নারী শিক্ষার অন্যতম এ অগ্রদূতের হত্যার ঘটনায় তার পরিবার ও দেশ অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এমন নির্মম ঘটনা এড়াতে আদালত ৬ দফা নির্দেশনাও দেন।
নির্দেশনাগুলো হলো-
প্রথমত, বাসা বাড়িতে নতুন গৃহকর্মী নিয়োগের পর অন্তত ৯০ দিন পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তারা কোনো অন্যায় করলে মারধর না করে কাছের থানা বা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, গৃহকর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে তার বিস্তারিত তথ্য, ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি রাখতে হবে। যার একটি কপি কাছের থানায় জমা দিয়ে রাখতে হবে।
তৃতীয়ত, বাসার মূল গেটে সিসি ক্যামেরা না থাকলে ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
চতুর্থত, অন্য কোনো গৃহকর্মীর মাধ্যমে গৃহকর্মী নিয়োগ করলে যার মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে তারও বিস্তারিত তথ্য রাখতে হবে এবং থানায় জমা দিতে হবে।
পঞ্চমত, কোনো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহকর্মী নিয়োগ করলে সেই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কেও তথ্য রাখতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স না থাকলে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করতে হবে।
ষষ্ঠত, গৃহকর্মী সরবরাহ প্রতিষ্ঠানকেও গৃহকর্মীর ছবি রাখতে হবে এবং এর একটি কপি সংশ্লিষ্ট থানায় দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এলিফেন্ট রোডের নিজ বাসায় খুন হন মাহফুজা চৌধুরী। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ইসমত কাদির গামা মামলা দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, মাহফুজা চৌধুরী ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার স্বামী ইসমত কাদির গামা একজন মুক্তিযোদ্ধা।