নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজ ঘরে ধর্ষণচেষ্টা ও বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে আদালতকে অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন।
আজ সোমবার (৫ অক্টোবর) বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। আদালতে বিষয়টি নজরে আনেন জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এসময় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশনা দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আরজি জানিয়েছেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে আদালত এ বিষয়ে লিখিত আবেদন করতে বলেছেন।
এসময় আদালতে মতামত তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি বলেন, গতকাল রাতে আমি ফেসবুকে এ জঘন্য ঘটনার ভিডিও দেখেছি। এটি অত্যন্ত জঘন্য একটি ঘটনা। এরূপ ঘটনা আগে কখনও দেখেনি। এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে না আসলে বেগমগঞ্জের ঘটনা গোপনই থেকে যেত: হাইকোর্ট
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত মাসের ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে গৃহবধূর (৩৫) বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে শ্লীলতাহানি করে স্থানীয় বাদল ও তার সংঘবদ্ধ বখাটে যুবক দল। ওই সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তারা তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিও চিত্র ধারণ করে।
রোববার দুপুরের দিকে ঘটনার ৩২দিন পর গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে তা ভাইরাল হয়। এতে টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। ঘটনার পর থেকে গত ৩২ দিন অভিযুক্ত স্থানীয় দেলোয়ার, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবারকে কিছুদিন অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে তার পুরো পরিবারকে বসতবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করলে পুরো ঘটনা দীর্ঘদিন স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ প্রশাসনের অগোচরে থাকে।
এদিকে, ৫ অক্টোবর ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি বাদল এবং নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এর আগে রোববার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ও রাতে অভিযান চালিয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃঞ্চপুর গ্রামের খালপাড় এলাকার হারিদন ভূঁইয়া বাড়ির শেখ আহম্মদ দুলালের ছেলে মো. রহিম ও একই এলাকার মোহর আলী মুন্সি বাড়ির মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো. রহমত উল্যাহকে গ্রেফতার করা হয়।