মামলার মূল এজাহার পরিবর্তন করে নতুন এজাহার ও অধস্তন আদালতের আদেশের অনুলিপি জাল করায় জোড়া খুনের মামলার সাত আসামির জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ রোববার (৪ অক্টোবর) এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে আদেশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে তাদের সংশ্লিষ্ট বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করার জন্য বলা হয়েছে। জামিন বাতিল হওয়া আসামিরা হলেন- শেখ সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, খালিদ শেখ, ইস্কান্দার শেখ, জমির শেখ, জিয়ারুল শেখ ও আব্বাস শেখ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানি করেন।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ গণমাধ্যমকে বলেন, মামলার মূল এজাহার পরিবর্তন করে জালিয়াতি চক্র নিজেরাই একটি এজাহার তৈরি করেন। তৈরি করেছেন নিম্ন আদালতের আদেশের অনুলিপিও। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি তারা হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেটি প্রত্যাহার (রিকল) করা হয়। যিনি আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এখন তাকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তার মোবাইল নম্বর বন্ধ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৩টার দিকে খুলনার তেরখাদা উপজেলার ছাগলাদাহ ইউনিয়নের পহরডাঙ্গা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে ছেলে নাঈম দুর্বৃত্তের হাতে নিহত হন। আড়াই মাস পর খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত বাবা পিরু শেখও (৫৫) মারা যান।
ওই ঘটনার পরদিন ৮ আগস্ট নিহতের মা মাফুজা বেগম বাদী হয়ে তেরখাদা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
ইতোমধ্যে ওই মামলায় তেরখাদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম দীন ইসলামসহ ১৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
এই মামলার তিন আসামি শেখ সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রহমান ও খালিদ শেখ ওই বছরের আগস্ট মাসে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর খুলনা জেলা ও দায়রা জজ এই মামলার আসামিদের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। পরে তারা চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে জামিন চান। ওই জামিন আবেদনে তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার তথ্য গোপন রাখা হয়।