উচ্চ আদালত
উচ্চ আদালত

ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা গ্রহণ না করায় বিচারিক তদন্ত চেয়ে রিট

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা গ্রহণ না করার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় (বিচারিক) তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।

জনস্বার্থে সোমবার (১২ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম এই রিট দায়ের করেন।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), টাঙ্গাইলের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), সাগরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ মোট ৭ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারী আইনজীবী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রিট আবেদনটির ওপর আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।

রিট আবেদনে, মামলা না নেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই ঘটনার বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নাগরপুর থানার ওসি আলম চাঁদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

এর আগে, চলতি বছরের গত ১৪ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার পর মতিউর রহমান নামের মাদরাসার এক শিক্ষার্থী স্থানীয় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাসায় ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হাতে থাকা ছুড়ি দিয়ে মেয়েটির গলায় পোজ দেওয়া হয়। এরপর ওই ছাত্রীর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো ব্যক্তি পালিয়ে যায়।

আহত অবস্থায় ভিকটিমকে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেই ছাত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসা নিতে গিয়ে ওই ছাত্রীর গলায় ২৫টি সেলাই দেওয়া হয়। পরের দিন তার বাবা নাগরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান। কিন্তু দায়িত্বরত কর্মকর্তা সে অভিযোগ গ্রহণ করলেও তা মামলায় অন্তর্ভুক্ত না করে অভিযোগকারীকে জানান- আসামি ধরার পর আপনার বিষয়টি দেখা হবে, ততদিন মামলা রুজু করা হবে না।

ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার ২২ দিন পর গত ৬ অক্টোবর পর্যন্ত মামলা গ্রহণ বা আসামি না ধরায় ভিকটিমের বাবা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে ঘটনার সত্যতা ও গুরুত্ব অনুধাবন করে তৎক্ষণাত জাতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সেলে ফোন করে তাদের সহযোগিতা নিয়ে পরদিন টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা দায়ের করি।

পরে এ বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় ওসি জানান, মামলাটি ৬ অক্টোবর গ্রহণ করা হয়েছে। অথচ এই মামলা সময়মতো গ্রহণ কলে তারিখ হতো ১৫ সেপ্টেম্বর। তাই এই ঘটনায় বিচারিক তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।