সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা।
আজ মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনের চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে জিসাদের বাবা জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম বলেন, আমি একজন হতভাগ্য সন্তানের পিতা… বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমার সন্তান ছিল অত্যন্ত মেধাবী। সে তার প্রতিটি রেজাল্টে মেধার স্বাক্ষর রেখেছিল। কানাডায় তার পিএইচডি করার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে যেতে পারেনি। তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, ছেলের শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক ও স্ত্রী হলো হত্যাকারী।
সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার পর কোনো এক সময়। সে তার মাকে বলেছিল সকাল ১০টায় বাসায় গিয়ে নাস্তা করবে। এরপর ওই দিন রাতে তার বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে শ্বশুরের বাসায় যায়। রাতে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির পর ৯ তলা থেকে তার ছেলেকে নিচে ফেলে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। বাবা হিসেবে তারা আমাকে জানায়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার যখন মৃত ঘোষণা করেন তখন তারা আমাকে জানায়।
তিনি বলেন, আমার ছেলে কাপুরুষ না বা এতোটা দুর্বল মানসিকতার না যে সে আত্মহত্যা করবে। সে চেয়েছিল লেখাপড়া শেষে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হবে। মানুষের সেবা করবে। আমার দুঃখ হলো, আমার ছেলেকে শ্বশুর বাড়িতে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হলো না। কাউকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হলো না। মামলাটি এখন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিআইবি) তদন্ত চলছে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মো. বশির আহমেদ, মো. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, আইনজীবী ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসিম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী।
এছাড়াও মানববন্ধে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট দাউদুর রহমান মিনা, ব্যারিস্টার খান মো. শামীম আহমেদ ও সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক কাজী জয়নুল আবেদীন।
মানববন্ধনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত শাস্তি নিশ্চিত করা এবং আসামিদের গ্রেফতারের দাবি তোলা হয়।
জিসাদের মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রী সাবরিনা শাহীদ নিশিতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন আসিফ ইমতিয়াজের শ্বশুর এ এস এম শহিদুল্লাহ মজুমদার, শাশুড়ি রাশেদা শহীদ ও শ্যালক সায়মান শহীদ নিশাত। আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম খান বাদী হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোরে ৯ তলার বারান্দা থেকে ‘লাফিয়ে পড়ে’ সুপ্রিম কোর্টের তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদের (৩৩) মৃত্যু হয়।