স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও স্বীকৃতি না পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের শহীদ সদস্যদের স্বীকৃতি দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। রিটে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডকে বিবাদী করা হয়েছে।
আজ সোমবার (১৯ অক্টোবর) শহীদ পরিবারের জীবিত সদস্য মিজানুর রহমানের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন।
রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন, আগামী সপ্তাহে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে একসঙ্গে ৫ জন স্বজন হারানো স্বাধীনতার ৪৮ বছরেও স্বীকৃতি না পাওয়া ঝিনাইদহের মুক্তিযোদ্ধার পরিবারটিকে নিয়ে গনমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাতা বা সুযোগ সুবিধা নয়, পরিবারটি শুধু চায় সম্মান। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গিলাবাড়ীয়া গ্রামের মিজানুর রহমান ও চায়না খাতুন। একাত্তরের সেসব কথা বলতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। যুদ্ধে মা-বাবা ও তাদের তিন ভাইবোনকে হারিয়েছেন মিজানুর ও চায়না।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১’র ডিসেম্বরের ৫ তারিখ দুপুর। গিলাবাড়ীয়া গ্রামের মোকছেদুর রহমান স্ত্রী ও ৩ সন্তান নিয়ে বসে ছিলেন বাড়ির উঠানে। পাকিস্থানি বিমান থেকে তাদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান মোকছেদুর রহমান। আহত হয়ে কিছুক্ষণ পর মারা যায় স্ত্রী ছকিনা খাতুন, মেয়ে রানু খাতুন, ২ ছেলে তোতা মিয়া ও পাতা মিয়া। আহত হয় ছোট মেয়ে চায়না খাতুন। বাড়ির বাইরে থাকায় বেঁচে যায় আরেক ছেলে মিজানুর রহমান।
পরিবারের ৫ সদস্যকে হারিয়ে চায়না ও মিজানুর হয়ে পড়েন অসহায়। সেসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের জন্য ২ হাজার টাকা অনুদান দেন। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় চলে তাদের সংসার। মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেওয়া ও নানাভাবে সহযোগিতা করায় এ হামলা বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ওই পরিবারের সদস্যদের স্বীকৃতি প্রদানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান। কিন্তু ওই নোটিশের যথোপযুক্ত জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ওই আইনজীবী।