প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আদালতকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টার অভিযোগে বাদীকেই জেল হাজতে পাঠিয়েছেন মৌলভীবাজারের একটি আদালত। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) মৌলভীবাজার ৩নং আমল গ্রহণকারী আদালতের বিচারক চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মোঃ হাবিবুর রহমান সি.আর-২২৪/২০২০ (কমলগঞ্জ) নং মামলার বাদী। এ মামলায় আজ শুনানির ধার্য তারিখ ছিল।
মামলার শুনানী চলাকালে আসামীপক্ষের আইনজীবী দাবী করেন, মিথ্যা অভিযোগ ও জাল কাগজাদি সৃজন করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে এবং বাদীপক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য নন এবং ভুয়া।
এতে বিচারকের সন্দেহ হলে এবং বাদীপক্ষে কোন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় বাদীপক্ষের নালিশি দরখাস্তে বর্ণিত আইনজীবীর একই নামের মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির দুইজন সদস্যকে আদালতে তলব করা হয়।
ওই দুই আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হয়ে জানান, তারা কেউই উক্ত মামলায় বাদীপক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী নন এবং নালিশি দরখাস্তে প্রদত্ত স্বাক্ষর তাদের কারো নয়। পাশাপাশি তারা ন্যায় বিচারের স্বার্থে এই জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেন।
পরে ডকে উপস্থিত মামলার বাদী মোঃ হাবিবুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন আইনজীবী পরিচয়দানকারী মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের মাধ্যমে ভুয়া চুক্তিনামা তৈরি করে প্রতারণা ও হয়রানী করার উদ্দেশ্যে বর্ণিত মামলাটি দায়ের করেন। তিনি অভিযুক্তদের চিনেন না এবং বিদেশ যাবার বিষয়ে কোন টাকা-পয়সার লেনদেন ও চুক্তি হয় নাই।
পরে আদালত এ ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করে মামলা খারিজ করে অভিযুক্তদের অব্যাহতি প্রদান করেন এবং আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ও প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে মোঃ হাবিবুর রহমানকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত আদেশে বলেন, বাদী মোঃ হাবিবুর রহমান ও মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন পরস্পর যোগসাজশে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মামলায় উল্লেখিত অভিযুক্তদের হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা আনয়ন করে আদালতের সময় নষ্টসহ বিচারিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছেন যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।