একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যু পরোয়ানা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে। মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর তার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে এ পরোয়ানা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার সাঈদ আহমদ জানান, সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাঠানো রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি তারা হাতে পেয়েছেন।
রেজিস্ট্রার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, আজ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে। সেই পরোয়ানা কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।”
লাল শালু কাপড়ে মোড়ানো সেই মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছানোর পর কারা কর্তৃপক্ষ আসামি সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে তা পড়ে শোনাবে।
এইচ এম এরশাদের সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার এখন ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন। তবে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন না করলে যে কোনো দিন রায় কার্যকর হতে পারে।
কায়সারের আইনজীবী তানভীর আহমেদ আলামিন গণমাধ্যমকে বলেছেন, রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পেলে তারা রিভিউ আবেদন করবেন।
তানভীর আহমেদ জানান, “রিভিউ পিটিশন করার জন্য আমার মাক্কেল আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করা আছে। হয়ত কয়েকদিনের মধ্যেই পেয়ে যাব।”
এর আগে সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ১৪ জানুয়ারি সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি সৈয়দ কায়সারকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে সাতটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড, চারটিতে যাবজ্জীবন ও তিনটিতে মোট ২২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সৈয়দ কায়সার। পরে আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিনটি অভিযোগে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন আদালত। এছাড়া চারটি অভিযোগ থেকে খালাস পান তিনি।