মহানগর, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সব পৌর এলাকায় অবস্থিত ব্যক্তি মালিকানাধীন হিসেবে রেকর্ড করা পুকুরগুলোকে ‘জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০’ এর ২ (চ) ধারায় প্রাকৃতিক জলাধারের সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে গত ৫ মার্চ সংক্ষিপ্ত রায় দেন হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
আদালত বলেছেন, রায় পাওয়ার এক বছরের মধ্যে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ আদেশ বাস্তবায়ন করবেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে বরিশাল শহরের ঝাউতলা এলাকায় শতবর্ষী একটি পুকুর ভরাট ও দখল বন্ধে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) নামের একটি সংগঠন। এ রিটের শুনানি নিয়ে একই সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রুল জারি করে স্থিতিবস্থার আদেশ দেন আদালত।
রুল শুনানিতে বাদীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এবং বিবাদী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
শুনানিতে বাদীপক্ষ বলে, ‘পরিবেশ আইন, ১৯৯৫’ ও ‘জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০’ এর বিধান অনুসারে যেকোনো জলাশয় ভরাট নিষিদ্ধ এবং ব্যক্তিগত পুকুর হলেও তা জলাধারের সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত। তাই পুকুর ভরাট করা যাবে না।
বিবাদীপক্ষের আইনজীবী বলেন, পুকুরটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন এবং মহানগরের মাস্টারপ্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত নয়, সুতরং আইনটি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, বরিশালের দেওয়ানি আদালতে এ বিষয়ে মামলা চলমান। রিট পিটিশন রক্ষণীয় নয়।
আইনের ব্যাখ্যা স্পষ্টকরণের জন্য তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং সিনিয়র আইনজীবী প্রবীর নিয়োগীর বক্তব্য শোনেন আদালত।
শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ চলতি বছরের ৫ মার্চ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আদালত রুল যথাযথ ঘোষণা করেন এবং পুকুরটির সীমানা বেআইনিভাবে অতিক্রম ও মাটিদ্বারা ভরাট করা থেকে বিরত থাকা এবং পুকুরটি রীতিমতো সংস্কার করে নিরাপদ পানি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।