সৌদি আরবের কারাগারে আমরণ অনশন শুরু করেছেন সে দেশের নারী আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী লুজাইন আল-হাসুল। ২০১৮ সাল থেকে কারাগারে রয়েছেন প্রখ্যাত এই অ্যাকটিভিস্ট।
তার পরিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে দেখা করা কিংবা ফোনে কথা বলার সুযোগ না দেওয়ার প্রতিবাদে অনশন শুরু করেছেন তিনি।
দেশের সুরক্ষা, স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টে সমন্বিত তৎপরতার অভিযোগ তুলে গ্রেফতার করা হয়েছিল সৌদি আরবের প্রখ্যাত আইনজীবী লুজাইন আল হাসুলকে।
২০১৯ সালের আগস্টে তার পরিবার অভিযোগ করে, আটকাবস্থায় তার ওপর শারীরিক ও যৌন নিপীড়ন চালানো হয়েছে।
সে সময় তার স্বজনরা দাবি করেন, লুজাইনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ভিডিওতে হাজির হয়ে তাকে বলতে হবে তার ওপর কোনও শারীরিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়ন করা হয়নি। তবেই তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তার বোন লিনা আল-হাসুল জানান, সোমবার থেকে লুজাইন অনশন শুরু করেছেন। তাকে পরিরবারের লোকজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেয়া হয় না, এমনকি দেখাও করতে দেয় না সৌদি কর্তৃপক্ষ। তার সঙ্গে সরকার খুবই বাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এর আগে, আগস্ট মাসে লুজাইন ছয় দিনের জন্য অনশন করেন। সে সময় তাকে দিনে পরিবারের লোকজনের একটি মাত্র ফোন কল রিসিভ করার অনুমতি ছিল এবং প্রতি ছয় মাসে দুইজন পারিবারিক সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে পারতেন।
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট করা ৩১ বছর বয়সী লুজাইনকে আটক করে রাজধানী রিয়াদের আল-হেয়ার কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি নারীদের ওপর থেকে গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালেও তিনি ৭০ দিনের জন্য আটক হয়েছিলেন।
লুজাইন নারীদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের জন্য কুখ্যাত রাজত্বে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেন। অভিভাবকের বিনা অনুমতিতে নারীদের ভ্রমণ, পাসপোর্ট প্রাপ্তি এবং সন্তান জন্মদান, বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ নিবন্ধনের অধিকার সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কট্টোর সমালোচক ছিলেন এই প্রখ্যাত আইনজীবী। ২০১৮ সালের এপ্রিলে সংযুক্ত আরব আমিরাত লুজাইনকে আটক করে সৌদি আরবের কাছে তুলে দেয়। একই বছর মে মাসে আরও ১০ অধিকারকর্মীর সঙ্গে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।