বিয়ের মাত্র একমাসের মাথায় যৌনাঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে শিশু কনের মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ তদন্ত এবং বৈবাহিক ধর্ষণকে অনুমোদনকারী বৈষম্যমূলক আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট (রেইপ ল’ রিফর্ম কোয়ালিশন)।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা সংবিধানের ২৮, ৩১, ৩২, এবং ৩৫(৫) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিধায় অবিলম্বে তা সংশোধনের দাবি জানান।
বিদ্যমান দণ্ডবিধি আইনের ৩৭৫ ধারা বিবাহিত নারীদের জন্য বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১৪ বছরের উর্ধ্বে কোন নারী বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে যৌন সহিংসতার শিকার হলে তা আইন অনুসারে ধর্ষণের আওয়তাভুক্ত নয়। যা সংবিধানের নিষ্ঠুর, অবমাননাকর ও অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক যে সুরক্ষা রয়েছে তা লংঘন করে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ বছরের এক কিশোরী বিয়ের মাত্র এক মাসের মাথায় যৌনাঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তার স্বামীর বয়স আনুমানিক ৩৪/৩৫ বছর।
শিশু কনের পরিবার থেকে বলা হয়, স্বামী বারংবার জোরপূর্বক সহবাস করায় বিয়ের পর দিন থেকেই কিশোরীর রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো। প্রয়াত কিশোরীর পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে এবং ময়না তদন্তের ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে।
যদিও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে প্রথমবার যৌন মিলনের সময় নারীদের জন্য আতঙ্ক এবং ভয় একটি প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া এবং প্রায়ই বিবাহিত নারীদের যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ ঘটে।
ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করেন, এটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। অনেক নারী এবং কিশোরীর বৈবাহিক ধর্ষণের অভিজ্ঞতা আছে। এই ধরণের যৌন সহিংসতায় ভুক্তভোগী বেশিরভাগ নারী প্রচলিত লিঙ্গ বৈষম্যমূলক আইনের প্রতিকার পায় না। বিশেষত দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় ব্যতিক্রম হিসেবে বলা হয়েছে নারীর বয়স ১৪ বছরের কম হলে তার সঙ্গে যৌনসম্পর্ক ধর্ষণ বলে গণ্য হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২৭.৩ শতাংশ বিবাহিত নারীরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এবং স্বামীর জোরজবরদস্তির কারণে যৌন মিলনে বাধ্য হয়।