স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক তথা বৈবাহিক ধর্ষণের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছে চারটি মানবাধিকার সংগঠন। আবেদনে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় উল্লেখিত ব্যতিক্রম বিধানটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সেখানে বলা আছে, ১৩ বছর বয়সের নিচে নয়, এমন কোনো মেয়ের সঙ্গে তার স্বামীর যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে না।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাক এইচআরএলএস, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এবং নারীপক্ষ এই চার মানবাধিকার সংগঠন রোববার (১ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করে।
চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টের বিচারপতি মজিবর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহি উদ্দিনের সমন্বিত বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
রিট আবেদনে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, প্রচলিত ধর্ষণ আইনে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ ব্যতিক্রমের ধারাটি লিঙ্গের ভিত্তিতে এবং বিশেষত বৈবাহিক অবস্থানের ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক এবং বিবাহিত নারীদের (তেরো বছরের বেশি বয়সী) মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে যা সংবিধানের ২, ২৮, ৩১, ৩২ এবং ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ দ্বারা সুরক্ষিত।
এজন্য দণ্ডবিধির ধর্ষণ সংক্রান্ত ৩৭৫ এর ব্যতিক্রম বিধান ও দণ্ডবিধির ধর্ষণের সাজা সংক্রান্ত ৩৭৬ ধারা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
উল্লেখ্য, বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার টাঙ্গাইলের চৌদ্দ বছরের এক কিশোরী কনে বিয়ের এক মাসের মাথায় ঢাকা মেডিক্যাল কজেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। স্বামীর চাপে বারংবার জোরপূর্বক সহবাসে লিপ্ত হওয়ায় যৌনাঙ্গে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে ওই কিশোরী কনের মৃত্যু হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর আনুমানিক ৩৪/৩৫ বছরের এক প্রবাসীর সাথে ওই কিশোরীর বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তা সত্ত্বেও স্বামী বার বার জোর করে শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২৭.৩ শতাংশ বিবাহিত নারীরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এবং স্বামীর জোরজবরদস্তির কারণে যৌন মিলনে বাধ্য হয়।