ইশতিয়াক হোসেন: ‘কোম্পানি আইন (দ্বিতীয় সংশোধন), ২০২০’ কার্যকর হওয়ার পর এক ব্যক্তি দ্বারা কোম্পানি গঠনের কাজ ইতোমধ্যে রেজিস্ট্রেশন অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানী সার্ভিস (RJSC)- এ চালু হয়েছে।
‘এক ব্যক্তির কোম্পানি’ হলো সেই কোম্পানি, যার বোর্ডে সদস্য থাকবেন কেবল একজন। এক ব্যক্তির কোম্পানির ক্ষেত্রে নামের শেষে লিখতে হবে ওপিসি / OPC (ওয়ান পারসন কোম্পানি)। একজন প্রাকৃতিক স্বত্বাবিশিষ্ট ব্যক্তি কেবল একটি ওপিসি গঠন করতে পারবেন। কোম্পানি আইনে একজনই শতভাগ শেয়ারের মালিক হবেন। তবে কোম্পানি স্মারকে তার একজন উত্তরাধিকারী বা মনোনীত ব্যক্তির নাম দিতে হবে। এক্ষেত্রে আরজেএসসির নিবন্ধককে জানিয়ে মনোনীত ব্যক্তি পরিবর্তন করার সুযোগ থাকবে। কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারের মৃত্যুর পর তিনি ওই কোম্পানির মালিক হবেন।
শেয়ারহোল্ডারের মৃত্যুর আগেই মনোনীত ব্যক্তি মারা গেলে অন্য কোনো উত্তরাধিকার বা মনোনীত ব্যক্তি নির্ধারণ করা যাবে। এক ব্যক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে তার একমাত্র সদস্যই কোম্পানির প্রথম পরিচালক হিসেবে গণ্য হবেন। তিনি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনে বিভিন্ন পদে যেমন পরিচালক, ম্যানেজার ও কোম্পানি সচিব নিয়োগ করতে পারবেন। তবে তাদের শেয়ারের কোনো অংশ থাকবে না। এক ব্যক্তি কোম্পানিরও বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করতে হবে।
এক ব্যক্তি দ্বারা কোম্পানি গঠনের ক্ষেত্রে পরিশোধিত মূলধন (Paid -up capital) হবে ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকার মধ্যে। আর তা গঠনের আগের অর্থবছরের বার্ষিক টার্নওভার বা লেনদেন ২ কোটি থেকে ১০০ কোটি টাকা হবে। এর চেয়ে বেশি হলে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ সাপেক্ষে যেকোনো ওপিসি প্রাইভেট বা পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা যাবে।
২০১৩ সালে ভারত সে দেশের আইন সংশোধন করে এক ব্যক্তির কোম্পানি নিবন্ধন ও পরিচালনার প্রচলন করে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এই এক ব্যক্তির কোম্পানির সিস্টেম আগে থেকেই রয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের ব্যবসায় পরিবেশের সূচকে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশেও সম্প্রতি কোম্পানি আইন সংশোধন করে এক ব্যক্তি কোম্পানি খোলার বিধান যুক্ত করা হয়।
ইশতিয়াক হোসেন: আইনজীবী; জজ কোর্ট, ঢাকা। ই-মেইল: advestiyak@gmail.com