রাজধানীর তিনটি হাসপাতাল ঘুরে জমজ নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শিশু হাসপাতাল এবং মুগদার ইসলামিয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে হাসপাতাল তিনটিকে।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ সোমবার (২ নভেম্বর) এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে শিশু হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অবহেলায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
এর আগে মৃত জমজ সন্তানদের মরদেহ নিয়ে আদালত চত্বরে নিয়ে যান তাদের বাবা সুপ্রিম কোর্টের এমএলএসএস মো. আবুল কালাম আজাদ। যার প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন আদালত।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘সোমবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের এমএলএসএস মো. আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী সায়েরা খাতুন অসুস্থবোধ করলে মুগদা হাসপাতাল নেয়ার পথে সিএনজির ভেতর জমজ সন্তান প্রসব করেন।’
‘এ সময় তারা প্রসূতিকে ইসলামিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় তারা নবজাতকদের শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরে দুই নবজাতককে অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, নবজাতকদের শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ খালি নেই বলে জানায়। পরিবর্তে তারা নরমাল বেডে শিশু দুটিকে ভর্তির জন্য বলে। সে জন্য দিনে ১০ হাজার করে টাকা লাগবে বলে জানানো হয়। এরপর তাদের বাবা হাইকোর্টের এক বিচারপতির সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেন। বিচারপতি তার নবজাতকদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, শিশু দুটিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে নিয়ে পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন আবুল কালাম। কিন্তু পরিচালক মিটিংয়ে রয়েছেন বলে জানান পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। পরে বলা হয় পরিচালক বাসায় চলে গেছেন। এরপর পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একজন চিকিৎসককে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা নবজাতকদের দেখান।
তখন ওই চিকিৎসক বলেন, জমজ নবজাতকরা আর বেঁচে নেই।
এরপর আবুল কালাম আজাদ অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই সন্তানের মরদেহ আদালত চত্বরে নিয়ে যান।