আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পর উচ্চ আদালতের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে সনদ প্রদান করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গেজেট প্রকাশ বৈধ বলে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে আজ রোববার (৮ নভেম্বর) বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
একইসঙ্গে এ ধরনের রিট করে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানকে ১০০ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।
এ দিকে এ রিট মামলার শুনানির একপর্যায়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমানার রুলও জারি করেছেন আদালত।
আদালতে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। অন্যদিকে বিচারপতির ছেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও তানিয়া আমির।
আদালত অবমাননার রুল জারির ব্যাপারে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘অনেক আগে হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম, এ কারণে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন।’
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, “আমি কবি সুকুমার রায়ের ‘বিচার’ কবিতার কয়েকটি পঙক্তি ফেসবুকে লিখেছি। আদালত মনে করেছেন এটা অবমাননা হয়েছে, তাই রুল জারি করেছেন।”
এর আগে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ২১ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় বারবার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেনি হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকী। অথচ গত ১৯ সেপ্টেম্বর জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে গত ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
তাই রিটে ওই গেজেট এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অর্ডারের ২১(১)(খ) ও ৩০(৩) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। জুম্মান সিদ্দিকীসহ বার কাউন্সিলের সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।