রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, ‘আইনি বিষয়ে আদালতে ভালো বলতে হলে বেশি বেশি বই পড়ার বিকল্প নেই।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে সোমবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণে তিনি এমন কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট বারের উদ্যোগে অনলাইনে লিগ্যাল বিষয়ে পড়তে আইনজীবীদের ‘মানুপত্র’ ডাটাবেজ ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের উদ্দেশে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আদালতে ভালো বলতে হলে আইনজীবীদের বেশি বেশি বই পড়তে হবে, আপনারা তখনই ভালো কথা বলতে পারবেন যখন পড়বেন।’
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আপনারা যেকোনো লিগ্যাল বিষয়ে জানার জন্য মানুপত্র ডাটাবেজ ব্যবহার করতে পারেন। আমরা গত মার্চ মাসে একটি পরিকল্পনা করেছিলাম, বারের পরিবেশ কীভাবে সাজানো যায়। লবি কীভাবে সুন্দর হবে, হলরুম কীভাবে সুন্দর হবে ইত্যাদি বিষয়ে। কিন্তু অন্য সবকিছু খারাপ থাকুক লাইব্রেরি সুন্দর না হলে কোনো কাজ হবে না। এ জন্য লাইব্রেরিতে অনলাইনে লিগ্যাল বিষয়ে বই পড়ার জন্য মানুপত্র ডাটাবেজ ব্যবহারে আইনজীবেীদের উৎসাহিত করার চিন্তা করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চিন্তা করি, যারা লাইব্রেরিতে লেখাপড়া করেন। যাদের লেখাপড়া করার নেট আছে এ ধরনের দুজন আইনজীবীকে বারের লাইব্রেরিতে কো-অপট করব। এ জন্য আমরা প্রথমে আজিম ও আনিতা গাজীর নাম নিলাম। আনিতা এসব কাজে খুবই পারদর্শী তাই তাকে আমরা কো-অপট করলাম।’
আমিন উদ্দিন বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমাদের মাথায় চিন্তা ছিল, আমাদের লাইব্রেরিটাকে ইউটিলাইজ করা। আমরা এখানে আর কত বই নিতে পারব। আপনারা জানেন, গতবার ৩০ লাখ টাকা নিয়ে আসলাম বই কেনার জন্য। কিন্তু বই রাখার জায়গা নেই। জায়গার সংকট। সেই চিন্তার প্রতিফলন কিন্তু আজকে ঘটল। অনলাইন লিগ্যাল ডাটাবেজ মানুপত্র ব্যবহার করে আমাদের লাইব্রেরি সমৃদ্ধ করতে পারব।’
তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভরতার যুগে অনলাইনেও লিগ্যাল বিষয়ে বই পড়তে উৎসাহিত করেছেন রাষ্ট্রের এই প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘করোনাকালে লাইব্রেরির জন্য আমরা ১০টি কম্পিউটার পেয়েছি। আমাদের ইচ্ছা ছিল বারের লাইব্রেরি সাজাব। আমরা মনে করি, আদালতে আপনি তখনই ভালো কথা বলতে পারবেন যখন আপনার বই পড়বেন। আপনারা যদি মনে করেন, যেকোনো লিগ্যাল বিষয়ে জানার জন্য অনলাইনে বই পড়া প্রয়োজন। এ জন্য মানুপত্র ব্যবহার করে লিগ্যাল বিষয়ে যেকোনো বই পড়তে পারবেন।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘করোনাকালে সুপ্রিম কোর্টের দুজন আইনজীবী লাইব্রেরির জন্য ১০টি কম্পিউটার দিলেন। আমাদের পেশাগত উন্নয়নের জন্য লাইব্রেরি সমৃদ্ধ করা জরুরি। সবচেয়ে সহজ হচ্ছে, আপনারা অনলাইনে সার্চ দিয়ে খুব সহজেই বই পড়তে পারবেন। আমাদের টিচাররা এগুলো পছন্দ করতেন না। তারা বলতেন ট্র্যাডিশন ওয়েতে বই খুঁজে বের করে পড়তে হবে। কিন্তু অনলাইনে সার্চ দিয়ে বই পড়া খুবই সহজ। লিগ্যাল রিসার্চ করার জন্য।’
ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা বারের মেম্বারদের জন্য সবচেয়ে ইজি ওয়ে (সহজপথ) সরবরাহ করতে চাই। এখন আপনারা এই সুযোগ নেবেন। আমি নিজেও অনলাইন মানুপত্রের সাবসক্রাইবার। আমি আশা করি, আমাদের সবাই মানুপত্র ব্যবহার করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্ট বারের সদস্যরা আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবেন। আমাদেরকে যেকোনো কাজের জন্য পরামর্শ দেবেন।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (বারের) সিনিয়র সহসভাপতি মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিনিয়র সহসম্পাদক ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সহসভাপতি আব্দুল জব্বার ভুইয়া, সহসম্পাদক বাকির উদ্দিন ভুইয়া, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মার-ই-য়াম খন্দকার, আমিরুল ইসলাম খোকন, মো. মহসিন কবির, সাইফুদ্দিন রতন, হুমায়ুন কবির, মোহাদ্দেস উল উসলাম টুটুল প্রমুখ।