জেনেভাস্থ ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ওয়াইপো) এবং রিপাবলিক অব কোরিয়ার সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে মেধাস্বত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ‘কপিরাইট ও রিলেটেড রাইট’ শীর্ষক এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সেমিনার পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন ওয়াইপো’র কপিরাইট ডেভেলপমেন্ট ডিভিশনের পরিচালক গাও হ্যাং। এতে অংশ নেন ওয়াইপো’র কর্মকর্তাবৃন্দ, রিপাবলিক অব কোরিয়ার সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার ও কর্মকর্তাবৃন্দ, গীতিকবিদের সংগঠন গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশের পক্ষে কবির বকুল ও জুলফিকার রাসেল, সুরকারদের সংগঠন মিউজিক কম্পোজার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বাপ্পা মজুমদার এবং কণ্ঠশিল্পীদের সংগঠন সিঙ্গার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষে জয় শাহরিয়ার।
আয়োজনে কপিরাইটের নানাদিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন পর্বে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বদরুল আরেফীন।
তিনি ওয়াইপো’র সকল সদস্য দেশের জন্য মিউজিকের রয়্যালটি বণ্টনসংক্রান্ত একটি সমন্বিত গাইড লাইন প্রণয়ন এবং ইউটিউব ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংগীতসংশ্লিষ্টদের রয়্যালটি প্রাপ্তির নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট দেশের কপিরাইট সনদকে বাধ্যতামূলক করার লক্ষ্যে ওয়াইপো’র পক্ষ থেকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এ সেমিনারে বাংলাদেশের পক্ষে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কপিরাইট রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী।
তিনি তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনাক্রমে যুগোপযোগী আইন ও বিধিমালা প্রণয়ন, সংগীতের ক্ষেত্রে রয়্যালটি বিভাজনের জন্য একটি সুষ্ঠু নীতিমালা তৈরি, সংগীতসংশ্লিষ্ট প্রণেতাদের অধিকার সুরক্ষায় বিদেশি এমসিএনের (মাল্টি চ্যানেল নেটওয়ার্ক) সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, সংগীত বিষয়ক আইএসআরসি কোড (ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড রেকর্ডিং কোড) পদ্ধতি প্রবর্তন, দেশের সকল লোক-সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি (ট্র্যাডিশনাল কালচারাল এক্সপ্রেশন-টিসিই) শনাক্ত; তথা লোকগান ও লোক সংস্কৃতির একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরিসহ নানা বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেন এবং এছাড়াও বিষয়সমূহের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণীত হবে বলে উল্লেখ করেন।
সেমিনারে কোরিয়ার সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প বিশেষজ্ঞ জি-ইন লি ‘সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে কপিরাইটের ভূমিকা: কোরিয়া’র কপিরাইট ব্যবস্থা’ এবং প্রকল্প পরিচালক দায়েওন উন, ‘চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কপিরাইট এবং রিলেটেড রাইটের ভূমিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার পারফর্মিং রাইট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক পরিচালক স্কট মরিস, ‘সংগীত জগতে কপিরাইট ও রিলেটেড রাইটের ভূমিকা’ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন বিশেষজ্ঞ আবীর মান্নান সংগীতের ক্ষেত্রে রয়্যালটি বিভাজন বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।
শেষে কপিরাইট রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের জন্য এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজনের জন্য ওয়াইপো, রিপাবলিক অব কোরিয়ার সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান।
সমাপনী বক্তব্যে গাও হ্যাং বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের কার্যক্রমের উন্নয়নে ওয়াইপো’র পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে সেমিনারের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। সূত্র- বাংলাট্রিবিউন