কুষ্টিয়ায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলশিক্ষার্থীকে কয়েকজন কিশোর মিলে মারধরের ভিডিও ভাইরালের পর কুষ্টিয়া মডেল থানায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবার করা মামলায় গ্রেফতার ৪ কিশোরকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী শনিবার (২১ নভেম্বর) এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট জিআরও উপ-পুলিশ পরিদর্শক নকিব উদ্দিন জানান, জামিন শুনানিকালে আদালতে উপস্থিত গ্রেফতার কিশোরদের বাবা-মা ও অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার শর্তে এই জামিনাদেশ দিয়েছেন।
এসময় অভিভাবকদের উদ্দেশে বিজ্ঞ আদালতের দেওয়া সতর্কতার শর্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিভাবকদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, তাদের কিশোর বয়সী শিশুরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে এবং মোবাইলে কি করছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, সব সময় সবক্ষেত্রে আইন দিয়ে সবকিছু হয় না। কোমলমতি এসব বাচ্চাদের যতোদিন পর্যন্ত নিজের ভালো-মন্দের জীবনবোধ গড়ে না উঠবে ততদিন পর্যন্ত এদের সকল দায়ই কার্যত অভিভাবকদের ওপর বর্তাবে। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাকে ভালো সন্তান হিসেবে গড়ে তোলার দায় নিতে হবে তাদের। না হলে এ জাতীয় অপরাধের ক্রমবৃদ্ধি চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠবে।
কুষ্টিয়ায় শিশু অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বরত প্রবেশন অফিসার আরিফুল ইসলাম জানান, বর্তমানে জেলায় সংঘটিত অন্তত ৪০টি শিশু-কিশোর অপরাধের ঘটনায় জড়িত শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করছি। অপরাধ সংঘটনের পর শিশু সুরক্ষা আইনের বিধিমতে, অভিভাবকদের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগে প্রদত্ত নির্দেশিকার আলোকে তাদের আইনী সহায়তাসহ সব রকম নার্সিং করা হচ্ছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা কুষ্টিয়া শহরের খোদাদাদ খান সড়ক থানাপাড়ার বাসিন্দা শামসুর রহমান তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলেকে মারধর, হত্যার হুমকি ও হত্যা চেষ্টা অভিযোগ এনে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম জানান, গত বৃহস্পতিবার শহরের হাউজিং এলাকার চাঁদাগাড়া মাঠে সংগঠিত কিশোর অপরাধের অভিযোগে করা মামলার এজাহারভুক্ত ৩ কিশোরসহ ৪ কিশোরকে শুক্রবার রাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাসা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার সকালে গ্রেফতার কিশোরদের আদালতে সৌপর্দ করলে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ তাদের জামিন দিয়েছেন।