মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত তবে পুরোনো, অপ্রচলিত এবং যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে অকার্যকর অস্ত্র বিক্রি করে দেয়ার বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র রক্ষায় রুলও জারি করেছেন আদালত। রুলে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা অস্ত্র বিক্রি/আগ্নেয়াস্ত্র স্থানান্তর কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অবিলম্বে ওইসব অস্ত্র সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে এসব অস্ত্র সংরক্ষণের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে- সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব এবং বাণিজ্য সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান (পান্না), অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন বাবুল, সৈয়দা নাসরিন ও মো. শাহীনুজ্জামান শাহীন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রগুলো বিক্রি করার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গত ১৫ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
গত ৫ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে এ-সংক্রান্ত প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান (পান্না) এবং মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
রিট আবেদনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সচিব এবং বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়েছে, এমন আগ্নেয়াস্ত্রগুলো সরকার বেচে দিতে চায়। সরকারের যুক্তি হচ্ছে এগুলো পুরোনো, অপ্রচলিত এবং যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে অকার্যকর। ফলে রাখার কোনো দরকার নেই।
প্রাচীন নিদর্শন বা স্মৃতিচিহ্ন (অ্যান্টিক সুভ্যেনির) হিসেবে অস্ত্রগুলো কিনে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ও সুইজারল্যান্ডের একটি অস্ত্র আমদানিকারক কোম্পানি।
রফতানি করতে চাওয়া পুরোনো অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্যে তৈরি ০.৩০৩ রাইফেল নম্বর-৪ এমকে-১; ৯ এমএম স্টেন এসএমজি এমকে-২ ও সিএম ৯ এমএম স্টেন এ১; ভারতে তৈরি ৭.৬২ এমএম এসটিআর এল১ এ১ /১ এ ১ ও রাইফেল জি-৩; পাকিস্তানে তৈরি ৪৪ এমএম হ্যান্ড লঞ্চার এম-৫৭; যুক্তরাষ্ট্র/রাশিয়া/জাপানে তৈরি পিস্তল ও রিভলবার ৭০০ এবং জার্মানি/যুক্তরাজ্য/ভারতে তৈরি এলএমজি এইচকে ১১ এ১ সিএএল ৭.৬২*৫১।