রাজধানীর কাকরাইলে মা ও ছেলেকে গলা কেটে হত্যা মামলায় সব আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আজ রোববার (১৭ জানুয়ারি) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে নিহত শামসুন্নাহারের স্বামী আবদুল করিমসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুইজন হলেন— করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তা ও তার ভাই আল-আমিন ওরফে জনি।
রায়ের পর্যাবেক্ষণে বিচারক বলেন, পিতার কাছে সন্তান সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। আর সন্তানের শ্রেষ্ঠ আশ্রয়স্থল পিতা। সেই সন্তানকে পিতা অন্যদের সহযোগিতায় হত্যা করে যে জঘন্য অপরাধ করেছেন, তার জন্য মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র প্রাপ্য। তাই সন্তানের বাবাসহ তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হলো।
রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সালাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করছি।
এর আগে ১০ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল ইসলাম রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৭ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
২০১৭ সালের ১ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাকরাইলের আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম রোডের ৭৯/এ নম্বর বাড়িতে শামসুন্নাহার (৪৫) ও তার ছেলে শাওনকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার পরদিন ২ নভেম্বর শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে রমনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় শামসুন্নাহারের স্বামী আবদুল করিম, তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমীন মুক্তা, শ্যালক (মুক্তার ভাই) জনিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। আবদুল করিম পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের মসলা ব্যবসায়ী।
২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলমের আদালতে আবদুল করিমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন। চার্জশিটভুক্ত অপর দুজন হলেন- করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তা ও তার ভাই আল-আমিন ওরফে জনি।
এরপর ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল ইসলাম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২২ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ১৭ জন সাক্ষ্য দেন।