আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন এক মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানী শেষে ২ জন আসামীকে সাজা প্রদান করেন ও মামলায় আসামীপক্ষে সাফাই সাক্ষী দেওয়ায় রমজান আলী স্বপন (২৭) এর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করার জন্য রায় ঘোষনাকালে নির্দেশ প্রদান করেন।
এই মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ফেনীর দাগনভূঁঞা থানাধীন মাছিমপুর গ্রামের আতু মিয়ার পুত্র জয়নাল আবেদীন (৭৫) কে ০১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১০,০০০/- টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ০১(এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং তার পুত্র ওমান প্রবাসী মো. সুমন (২৮) কে ০২(দুই) বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০,০০০/- টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ০১(এক) মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন।
রায় ঘোষনাকালে আসামী জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। পলাতক আসামীর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। অভিযোগকারীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট এম. শাহজাহান সাজু ও আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
মামলা নথিসূত্রে জানা যায়, আসামী সুমন ও তার পিতা জয়নাল আবেদীন দাগনভূঁঞা থানাধীন বারইকান্দি গ্রামের মৃত বজলের রহমানের পুত্র মো. ওমর ফারুককে ৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে ওমান প্রেরণ করেন। বাদী বিদেশ যাওয়ার পর ভিসা ও আকামার জটিলতা থাকায় ২৭ দিন কারাগারে থাকেন এবং দেশে ফেরত আসেন। স্থানীয়ভাবে সালিশ করে ২,৫০,০০০/- টাকা আসামীগণ পরিশোধ না করায় গত ১২ জুলাই, ২০১৮ তারিখ এই মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে আরো জানা যায়, এই মামলা বিচারকালে বাদী পক্ষে মোট ০৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। অপরদিকে আসামীপক্ষে আসামী জয়নাল আবেদীন ও মিথ্যা সাক্ষী দানকারী রমজান আলী স্বপন সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষী রমজান আলী স্বপন গত ০৯ ফেব্র“য়ারী, ২০২১ তারিখ সাক্ষী দিয়ে দাবী করেন, তিনি অভিযোগকারী থেকে টাকা নিয়ে তাকে ওমান প্রেরণ করেন। মামলার সাক্ষ্য ও অন্যান্য প্রমাণ পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামী সুমনের সাথে ওমানে একই কোম্পানীতে চাকুরী করার সুবাদে এবং একই বাসায় ও একই কক্ষে থাকার সুবাদে আসামী সুমন ও তার পিতাকে বাঁচানোর জন্য তার সাথে কোন সম্পর্ক না থাকার পরও তিনি বাদীকে বিদেশ নেন মর্মে দাবী করেন। বাদীপক্ষে আইনজীবির জেরায় ও মামলার অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যে রমজান আলী স্বপন মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার বিষয় প্রমাণিত হয়।
আদালতে শপথ করে আসামীকে মামলার দায় থেকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ায় ও আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করায় সাক্ষী রমজান আলীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা রুজুর নির্দেশ দেওয়া হয় মর্মে রায়ে উল্লেখ করা হয়।