কারাগারে রূপম কান্তি নাথ নামে এক হাজতিকে বৈদ্যুতিক শক ও বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করার অভিযোগে দায়ের করা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) তার স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত সোমবার (১ মার্চ) চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারসহ চার জনকে আসামি করে রূপম কান্তি নাথের স্ত্রী ঝরনা রানী আদালতে নালিশি মামলা করেন। মঙ্গলবার (২ মার্চ) ওই অভিযোগের বিষয়ে শুনানি হয়। ওই দিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হোসেন মোহাম্মদ রেজার আদালত উপযুক্ত আদালতে মামলা করতে আবেদনটি ফেরত পাঠান। এরপর বৃহস্পতিবার মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কারাগারে নির্যাতনের ঘটনায় রূপম কান্তি নাথের স্ত্রী জেল সুপারসহ চার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৩ (১) (২)-এর (ক) (খ) (গ) ধারায় তিনি মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি আদালত পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।’
মামলার আসামিরা হলেন– সাতকানিয়ার মৌলভির দোকান এলাকার রতন ভট্টাচার্য, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার, জেলার এবং জেলখানায় কর্তব্যরত সহকারী সার্জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় আরও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামিও করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, এজাহারভুক্ত আসামি রতন ভট্টাচার্যের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত একটি মামলায় (জিআর মামলা নম্বর ৩৩২/১৮) গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর কারাগারে যান ভুক্তভোগী রূপম কান্তি দেবনাথ। চলতি বছরের ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে রূপমকে (বাদীর স্বামী) অন্যায়ভাবে বিচারাধীন মামলায় জোর করে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য এবং স্থায়ীভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন করার জন্য শারীরিক নির্যাতন, বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পুশ এবং বৈদ্যুতিক শক দিয়ে নির্যাতন করেন।
নির্যাতনের খবর পেয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বন্দি রূপম কান্তি নাথের উন্নত চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করেন মামলার বাদী। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। বর্তমানে রূপম কান্তি নাথ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বুধবার (৩ মার্চ) মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত ১০ হাজার টাকা বন্ডে তাকে জামিন দেন। কিন্তু যথাসময়ে জামিননামা দাখিল না করায় বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) জামিন বাতিল করা হয়।