বাংলাদেশের মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল সুপ্রিম কোর্টের বাউন্ডারিতে এসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হোক, আর যেই হোক কেউ যদি অপরাধ করে থাকে আমাদের আইনজীবী সমিতি আছে তাদের জানাতে পারতো। প্রধান বিচারপতিকে জানাতে পারতো। সে তো চোর ডাকাত না, সে তো ভেগে যাচ্ছে না, বাড়ি থেকেও তাকে গ্রেফতার করা যেত। তাকে কোর্ট আঙিনা থেকে গ্রেফতার করা সমীচীন নয়, এটা বেআইনি, এটা ধৃষ্টতা, এটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ বলে মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু এমপি।
রোববার (১৪ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সামনে আইনজীবী মোঃ ইব্রাহিম খলিলকে নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রধানকে উদ্দেশ্য করে আব্দুল মতিন খসরু বলেন, ‘আমি বলে দিতে চাই, জড়িতদের শনাক্ত করেন, বরখাস্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করেন। তাদের বাহিনীতে থাকার কোনো অধিকার নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবশ্যই আইন অনুযায়ী কাজ করবে। উল্টো তারা যদি বেআইনি কাজ করে তাহলে অন্যরা কি করবে?’
মানববন্ধনে আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, সমিতির কোষাধ্যক্ষ ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, সমিতির সহ সম্পাদক ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধন পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল।
প্রথমে তিনি একাই দাঁড়ালেন-
আইনজীবী মো. ইব্রাহীম খলিলকে গ্রেফতার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের মূল প্রবেশ পথে বুকে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম আশরাফ নামে এক আইনজীবী একাই মানববন্ধন করেন। পরবর্তীতে বড় পরিসরে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে গিয়ে সবার সাথে দাঁড়ান।
ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আইনজীবী মো. ইব্রাহীম খলিলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা তুলে নিয়ে, দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করে সরকারের প্রতি আইনজীবীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষে নিন্দা ও মুক্তি দাবি করে বিবৃতি-
আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস বিবৃতিতে বলেন, আইনজীবী ও সমিতির বিজ্ঞ সদস্য মো. ইব্রাহিম খলিলকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি গভীর নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং এ ব্যাপারে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে। তিনি বলেন, যে অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তা হাস্যকর।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ আইনজীবী মো. ইব্রাহীম খলিলকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে তুলে নিয়ে যায়। অজ্ঞাতস্থানে আটকে রেখে তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।