প্রথম বিসিএসে (১৯৭৩) নিয়োগ পাওয়া যুগ্ম সচিব ও উপ-সচিব পদের ৩৯ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে তাদের প্রাপ্য পদমর্যাদায় ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি এবং সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
২০২০ সালের ১ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চের ঘোষিত রায় স্বাক্ষরের পর প্রকাশ করা হয়। ২০১৩ সালে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেন আদালত।
সে সময় আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রেজা-ই রাব্বী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
রোববার (২১ মার্চ) রিটকারীদের আইনজীবী রেজা-ই-রাব্বী রায় প্রকাশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। ওই ৩৯ কর্মকর্তা বর্তমানে অবসরে রয়েছেন।
আইনজীবী রেজা-ই রাব্বী জানান, পদোন্নতি বঞ্চিত না হলে এই ৩৯ জনের মধ্যে ৩৭ জন সচিব, একজন অতিরিক্ত সচিব ও একজন যুগ্ম সচিব হতেন।
রায়ে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ‘পদোন্নতি বা নিয়োগের নীতিমালার’ আলোকে অবসরে যাওয়া এসব যুগ্ম সচিব ও উপ-সচিব প্রাপ্যতা অনুসারে পদোন্নতিসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা ও পদমর্যাদা পাবেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০০২ সালের ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বা নিয়োগের বিধিমালা’ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বা কার্যকর হবে না।
আইনজীবী রেজা-ই রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন সময় পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিসিএস কর্মকর্তা মো. সাইফুজ্জামান, মো. আমিরুল ইসলাম, মো. খলিলুর রহমানসহ ৩৯ কর্মকর্তার পক্ষে ২০০২ সালের বিধিমালা চ্যালেঞ্জ করে তিনটি পৃথক রিট করা হয় ২০১৩ সালে। রিটে ২০০২ সালের ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বা নিয়োগের বিধিমালা’ চ্যালেঞ্জ করা হয়।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত প্রাথমিকভাবে ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর রুল জারি করেন। রুলে ২০০২ সালে প্রণীত বিধিমালা কেন রিট আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে অবৈধ এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়, এবং অবসরে যাওয়া পদোন্নতি বঞ্চিত ৩৯ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ১৯৯৮ সালের নীতিমালা অনুযায়ী পদোন্নতির সুযোগ-সুবিধা কেন দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন।